সিলেটে জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
সিলেটে লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতের এপিপি মাসুক আহমদ জানান, সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমিনুন নেসার বৃহস্পতিবার মামলার বাদী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
গত বছর ৩ মার্চ বিকালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালান মাদ্রাসাছাত্র ফয়জুল হাসান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল বাদী হয়ে ওই দিনই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জালালাবাদ থানায় মামলা করেন।
এপিপি মাসুক আহমদ বলেন, আলোচিত এ মামলায় ৫৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী ২৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছে আদালত। বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ফয়জুলসহ ছয় আসামি উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান।
গত বছর ৪ অক্টোবর এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। তার আগে ২৬ জুলাই ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম। এপিপি মাসুক বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত বলে ফয়জুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে ফয়জুল বলেছেন, ২০১৬ সালে বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে পাওয়া মেমোরি কার্ডে জসিম উদ্দিন রহমানী, তামিম ইল আদরানী ও অলিপুরী হুজুরের ওয়াজ শুনে জিহাদের ব্যাপারে প্রভাবিত হন তিনি। এছাড়া জসিম উদ্দিন রহমানীর লেখা ‘উন্মুক্ত তরবারী’ বই ও তিতুমীর মিডিয়ার ভিডিও দেখে ফয়জুলের ধারণা হয়, জাফর ইকবাল একজন ‘নাস্তিক’। এই ধারণা থেকে ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। একাই হত্যার জন্য ছুরি নিয়ে আঘাত করেন।
ঘটনার বিভিন্ন স্থির চিত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় বলে জানান এপিপি মাসুক। তিনি বলেন, ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার জন্য আঘাত করেন বলে পুলিশের তদন্তেও উঠে এসেছে। আশা করছি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।