সাংবাদিক গৌতম হত্যা মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন সাজা বহাল
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
এক যুগের বেশি সময় আগে ফরিদপুরে সাংবাদিক গৌতম দাস হত্যার ঘটনায় পাঁচ আসামির যাবজ্জীবন সাজা বহাল রেখে বাকি চারজনকে খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেয়।
আসামি আসিফ ইমরান, সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, আসাদ বিন কাদির, আবু তাহের মর্তুজা ওরফে অ্যাপোলো ও তামজিদ হোসেন বাবুকে বিচারিক আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার সাজা বহাল রাখা হয়েছে। এই জারিমানা না দিলে আসামিদের আরও এক বছর কারাভোগ করতে হবে।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসিফ ইমতিয়াজ বুলু, কামরুল ইসলাম আপন, রাজিব হাসান মিয়া ও কাজী মুরাদ হাই কোর্টে আপিল করে খালাস পেয়েছেন। দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতমকে ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর হত্যা করা হয়।
দীর্ঘ আট বছর বিচার শেষে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০১৩ সালে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা পাঁচটি ফৌজদারি আপিল করেন হাই কোর্টে। সেসব আপিলের ওপর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত ৯ জানুয়ারি হাই কোর্ট এ মামলার রায়ের দিন ঠিক করে দিয়েছিল। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন-অর রশীদ। তার সঙ্গে ছিলেন, সাথী শাহজাহান, জাহাঙ্গীর আলম ও জহির আহমদ।
আসামি সিদ্দিক ও অ্যাপোলোর পক্ষে আইনজীবী হেলালউদ্দিন মোলা; আসামি ইমরান, বুলু, আপন ও রাজীবের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ আলী মোকাররম; বাবুর পক্ষে আইনজীবী আওলাদ হোসেন; আসামি আসাদের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রশীদ ও ওমর ফারুক এবং আসামি মুরাদের পক্ষে আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম শুনানি করেন।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন-অর রশীদ বলেন, হাই কোর্ট আপিলের রায়ে নয় আসামির মধ্যে পাঁচ আসামির সাজা বহাল রেখে বাকি চারজনকে খালাস দিয়েছেন। খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কের সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি খবর প্রকাশের জের ধরে ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতমকে তার কার্যালয়ে ঢুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি হাসানউজ্জামান ওইদিনই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের দুইমাস পর ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ফরিদপুরের আদালতে ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম নবী।
দশ আসামির মধ্যে জাহিদ নামের একজন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে মামলা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ‘স্পর্শকাতর’ বিবেচনায় সরকার ওই বছর এপ্রিলে মামলাটি ফরিদপুর থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠায়।
চারজন বিচারকের হাত ঘুরে মামলাটি পরে রায়ের পর্যায়ে আসে। ২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন নয় আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।