May 2, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

সংসদ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে দল গোছাচ্ছে আ’লীগ

আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে জেলাসহ সর্বস্তরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলন করার লক্ষ্য

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দল গোছানোর কাজে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে জেলাসহ সর্বস্তরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলন করতে কাজ শুরু করেছে দলটি।
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। এ সময়ে দলীয় ও সাংগঠনিক সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে নির্বাচনী প্রস্তুতিকে কেন্দ্র করে। নির্বাচনের আগে কেন্দ্র থেকে শুরু করে দলের সর্বস্তরে নতুন নেতৃত্ব আনা হবে। সে ক্ষেত্রে সর্বস্তরেই কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটগুলোতে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দায়িত্ব নেবেন।
কোভিড-১৯ এর কারণে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাংগঠনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটগুলোর সম্মেলনের কর্মসূচি হাতে নেওয়ার পরই শুরু হয় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ। এতে সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
নেতারা জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ স্থানে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে আসলে সংগঠন দ্রুত গতিশীল হবে। ফলে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিতে শক্তিশালী সংগঠন বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিষয়টিকে মাথায় রেখেই আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে জেলা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের মোট সাংগঠনিক জেলা ৭৮টি। এরমধ্যে মাত্র ৩১টির সম্মেলন শেষ হয়েছে। বাকি ৪৭টি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। উপজেলা সম্মেলনও প্রায় অর্ধেক বাকি রয়েছে। এছাড়া পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের বিষয়ও রয়েছে। ইতোমধ্যেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ৮টি সাংগঠনিক টিম কার্যক্রম শুরু করেছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কয়েকটি জেলার সম্মেলনের তারিখও এরই মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় নির্বাচনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে দলের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিভাগকে সেমিনারের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহারে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে সেগুলো আপডেট করার জন্য উপ-কমিটিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে আগামী বছর ডিসেম্বরে। এরপর কেন্দ্রীয় সম্মেলনও যথা সময়ে করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনের আগেই কেন্দ্রীয় কমিটিতেও নতুন মুখ আসবে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ আগামী বছর ডিসেম্বরে শেষ হবে। দলের সম্মেলন কখনও আগাম হয়নি, মেয়াদ শেষেই অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয় সম্মেলন যথা সময়েই হয়। আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। আর সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হবে ৬ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষের কমপক্ষে ৯০ দিন আগে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমাদের লক্ষ্য আগামী জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই দল গোছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড যে সব জায়গায় কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, সেগুলোর সম্মেলনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য পদ নবায়ন, বর্ধিত সভার আয়োজন করা হচ্ছে। যে সব জায়গায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে, সেগুলো মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। করোনা পরিস্থিতির আর অবনতি না হলে দলের এসব কার্যক্রম আরও গতি পাবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিনিধি সভা, কর্মীসভা, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যেই সাংগঠনিক কাজ যেখানে যতটুক পারা যায় গুছিয়ে আনা হবে। তবে আগামী বছর মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটগুলোর সম্মেলন করা হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এসব কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *