শোকাবহ আগস্ট
দ: প্রতিবেদক
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আধুনিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্মদাতা। বাঙালি জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা। বঙ্গবন্ধু বাঙালির কাছে এমন এক নেতা যিনি জাতির কাছে স্বদেশের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছেন। উপমহাদেশে রাজনীতি ছিল অভিজাত ও বিত্তবানদের অধিকারে। বঙ্গবন্ধুই এ দেশে রাজনীতিতে কৃষকদের, সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এই মহান নেতার আত্মত্যাগ ও অর্জনকে ’৭৫ সালে হত্যার পর নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর সদম্ভে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছিল খুনীচক্র। দম্ভভরে আত্মস্বীকৃত খুনী মেজর ফারুক বলেছিল ইচ্ছা করলে বাংলাদেশ সরকার আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। সেদিনের সেই দম্ভ বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় ঘোষণার পর ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে অন্তিম সময়ে এসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিল এই কুখ্যাত খুনী ও তার দোসররা।
১৯৭৬ সালের ৩০ মে লন্ডনের ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে সৈয়দ ফারুক রহমান স্বীকার করেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে সে জড়িত ছিল। ‘আই হেল্পড টু কিল মুজিব, ডেয়ার ইউ পুট মি অন ট্রায়াল?’ শিরোনামে প্রকাশিত এ নিবন্ধে সে দম্ভের সঙ্গে বলে ‘শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ইচ্ছা করলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে।’…‘আমি শেখ মুজিবকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছি।’
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মধ্যদিয়ে জাতির ইতিহাসের অন্ধকার যুগের অবসান ঘটে। জাতি হয় কলংকমুক্ত। তবে সাধারণ মানুষের মত সাধারণ আদালতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ সম্পন্ন হওয়ার সময় লেগেছে এক যুগের বেশি, ১৪ বছরের মতো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনীদের রক্ষা করতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটিকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন। আজ শোকাবহ আগস্টে তৃতীয় দিন। জাতির জনকের আত্মার শান্তি কামনায় আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসমূহ ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের মাসব্যাপী কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আজও আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিলসহ দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।