November 27, 2024
জাতীয়শীর্ষ সংবাদ

শিশুদের হাতে নিউজপ্রিন্টের অনুজ্জ্বল বই

রোববার (১ জানুয়ারি) দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বই উৎসব ২০২৩’। এদিন সারাদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বই পায়নি অনেকে। যারা পেয়েছে তাদের মধ্যেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর হাতে দেখা গেছে পুরান বই। এর মধ্যে নতুন যারা পেয়েছে তাদের হাতে ওঠা বইগুলোর বেশিরভাগ ছাপা হয়েছে নিম্নমানের নিউজপ্রিন্ট কাগজে। বিবর্ণ এসব বই পেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অনেকেই অখুশি।

রাজধানীর দক্ষিণ মুহসেন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজিয়া ইসলাম শায়না চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে জানায়, ‘এ বছর আমরা একটি বইও পাইনি। শিক্ষকরা বলেছেন, নতুন বই আসেনি। তবে আমার সহপাঠীরা সবাই উৎসবে এসেছে।’

একই স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম আভা জানায়, ‘নতুন বছরে বই পাইনি। কেন পাইনি তাও জানি না। শিক্ষকরা আমাদের এখানে নিয়ে এসেছেন, তাই এসেছি।’

আফসানা আক্তার মরিয়ম নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘এ বছর আমি পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছি, তবে নতুন বছরের বই না আসায় বই পাইনি। উৎসবে আসার সময় আমাকে স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণির বই দেওয়া হয়েছে।’

রোববার (১ জানুয়ারি) উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা বইগুলোতে দেখা যায়, বেশিরভাগই নিউজপ্রিন্টের অতি নিম্নমানের কাগজে ছাপা। সচেতন অভিভাবকরা বলছেন— এসব কাগজ উজ্জ্বলতা ছিল কাঙ্ক্ষিত মানের অনেক নিচে। এসব বইয়ের উজ্জ্বলতা সর্বনিম্ন ৮০ শতাংশ হওয়ার কথা ছিল।

বছরের প্রথমদিনে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই তুলে দিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজন করে ‘বই বিতরণ উৎসব-২০২৩’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, সব বিদ্যালয়ে তিন থেকে চারটি বিষয়ের বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে সব বিদ্যালয়ে শতভাগ বই পৌঁছে দেওয়া হবে।

নতুন বইয়ের মান নিয়ে তিনি বলেন, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এবছর স্বাধীন এজেন্সি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোথাও নিম্নমানের বই পাওয়া গেলে পরিদর্শন টিম এনসিটিবি, মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে জানাবে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে এ বছর প্রাথমিকে ২ কোটি ১৮ লাখ ৩ হাজার ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণের কথা রয়েছে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *