শিক্ষক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল কুয়েট
দোষীদের স্থায়ী বহিস্কার না করা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন শিক্ষকরা
ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবি
ফুলবাড়ীগেট প্রতিনিধি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচারের দাবিতে কুয়েট শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রসাশনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির সকল সদস্যবৃন্দ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ^বিদ্যালয়ের দূর্বার বাংলা’র পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে তাদেরকে বিশ^বিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা না পর্যন্ত বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সকল একাডেমিক কার্যক্রম সম্পাদন করা থেকে বিরত থাকবেন। শিক্ষক সমিতি কর্তৃক গৃহীত যে কোন ধরনের কর্মসূচির সময় অত্র বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমও বর্জন করবেন। নিহত ড. মোঃ সেলিম হোসেনের পরিবারকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী প্রাপ্য ন্যায্য অর্থনৈতিক সুবিধাসহ অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অত্র বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও ইউজিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আইনী বিচারিক প্রক্রিয়া অতিদ্রæত সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে। বিশ^বিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন মারা যান। তিনি লালন শাহ ছাত্রহলের প্রভোস্ট ছিলেন। চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু মৃত্যুর আগে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন ওই শিক্ষক। লালন শাহ ছাত্রহলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ওঠে ছাত্র সংগঠনের কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তারা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিত তাদের মনোনীত প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য।
এ ব্যাপারে কুয়েট ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আসলাম পারভেজ বা অন্য কেউ আমার নিকট আসেনি। ঘটনার পরদিন (১ ডিসেম্বর) সকালে শিক্ষক সমিতির বৈঠক চলাকালীন সময়ে আমার প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় আমি বাসায় অবস্থান করছিলাম, আমি কোথাও পালিয়ে যায়নি। আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নিহত শিক্ষক সেলিম হোসেনের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ময়নাতদন্ত ও মামলা করতে রাজি হয়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।