April 26, 2024
লাইফস্টাইল

শক্তি বাড়ানোর ৭ উপায়

ক্লান্তির অনুভূতি হতাশার একটি বিষয়। এটি কাজেকর্মে অনীহা নিয়ে আসে। শারীরিক শক্তির অভাবে ইচ্ছেশক্তিও তেমন কাজ করে না। ফলে অন্যরা এগিয়ে গেলেও ক্লান্তির কারণে কারো কারো পিছিয়ে যেতে হয়।

প্রতিযোগিতার এই সময়ে টিকে থাকতে হলে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্বকে কোনোভাবে অগ্রাহ্য করা যাবে না। সুখবর হলো, জীবনযাপনের কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে সতেজ হতে পারবেন। এখানে শরীরের শক্তি বাড়ানোর কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো।

* কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট খান: পাউরুটি, বিস্কুট ও কেক কখনোই সেরা খাবার নয়- বিশেষ করে যদি নিজেকে দীর্ঘসময় সতেজ রাখতে চান।এসব খাবার খেলে রক্ত শর্করা যেমন দ্রুত বাড়বে, তেমনি দ্রুত কমে যাবে। এর ফলে দুর্বলতা অনুভব করবেন। বেশি করে উচ্চ আঁশের খাবার খান, যা কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ। উচ্চ পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন কিছু খাবার হলো- গোটা শস্যের পাউরুটি, সিরিয়াল ও শাকসবজি। এসব খাবার রক্ত শর্করা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

* অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট কমিয়ে ফেলুন: ২০১৬ সালে ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডিলেডের একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়েছে- যেসব পুরুষ উচ্চ পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেয়েছেন তারা দিনের বেলা বেশ ক্লান্তিতে ভুগেছেন। লক্ষ্য রাখুন যেন দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি না হয়।

* নিয়মিত পালংশাক খান: দুর্বলতা কাটানোর একটি প্রাচীন উপায় হলো পালংশাক খাওয়া। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও বি ভিটামিন রয়েছে। উভয় পুষ্টিই শক্তি বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

* ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান: ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে সবল করতে পারে। তাই প্রায়শ ক্লান্তিতে ভুগলে খাদ্যতালিকায় ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বাড়াতে মনোযোগী হোন, যেমন- বাদাম, কলা, মসুর ডাল, ছোলা, গম, চিয়া সিড, ফ্লাক্স সিড ও বার্লি।

* পর্যাপ্ত পানি পান করুন: সারাদিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন। তৃষ্ণার্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না, কারণ আমাদের পিপাসার অ্যালার্ম সবসময় নির্ভুল নয়। এমনকি অল্প ডিহাইড্রেশনও (শারীরিক পানিশূন্যতা) ক্লান্তিতে ভোগাতে পারে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় সীমিত করুন। কারণ কফি ও কোমল পানীয়ের ক্যাফেইন শক্তি যোগালেও দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়।

* শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৪/৫ দিন শরীরচর্চার চেষ্টা করুন। নিয়মিত শরীরচর্চায় শরীর সবল হয়ে ওঠে এবং রাতে ভালো ঘুম হয়, যার ফলে দিনে দুর্বলতা অনুভূত হয় না। অন্যান্য শরীরচর্চার পাশাপাশি ইয়োগা করতে পারেন। ৩০ মিনিট সময় না থাকলে অন্তত ১০ মিনিট হলেও লো-লেভেল এক্সারসাইজ করুন।

* পর্যাপ্ত ঘুমান: প্রাপ্তবয়স্ক লোকেদের প্রতিরাতে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। প্রতিদিন একই সময়ে জেগে ওঠুন, এমনকি বন্ধের দিনেও। পর্যাপ্ত ঘুমাতে রাতে তাড়াতাড়ি বিছানায় যান। এভাবে জীবনযাপন করলে দিনে তেমন ক্লান্তি অনুভূত হবে না। দিনে ন্যাপ নিতে পারেন, অর্থাৎ ১৫-৩০ মিনিট ঘুমাতে পারেন। এটা শরীরে আরো সতেজতা এনে দেবে।

* কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

ক্লান্তির কারণ তালিকা বেশ দীর্ঘ। সাধারণ কারণ যেমন রয়েছে, তেমনি মারাত্মক কারণও রয়েছে। ক্লান্তির উল্লেখযোগ্য কারণ হলো- ঘুমের ঘাটতি, পুষ্টির অভাব, ফ্লু সংক্রমণ, অন্যান্য সংক্রমণ, স্থূলতা, অ্যালার্জি, রক্তশূন্যতা, মাদক সেবন, থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি, হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও এইডস।

এ প্রতিবেদনে উল্লেখিত পদক্ষেপ অনুসরণের পরও সবসময় ক্লান্তিতে ভুগলে চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন। ক্লান্তির সঙ্গে পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অথবা তীব্র মাথা ব্যথা করলে জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল যেতে হবে। এছাড়া পেশি ব্যথা, বমিভাব, জ্বর অথবা দেখতে সমস্যা হলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *