May 4, 2024
আন্তর্জাতিক

লাদাখে পাল্টাপাল্টি গুলির অভিযোগ, ভারত বলছে পরিস্থিতি খুবই গুরুতর

বিরোধপূর্ণ লাদাখ সীমান্তে পাল্টাপাল্টি গুলিবর্ষণের অভিযোগ করেছে পারমাণবিক অস্ত্রধারী চিরবৈরী দুই প্রতিবেশি চীন এবং ভারত। সোমবারের এই গোলাগুলির ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। সীমান্তে চীন-ভারতের সামরিক এই উত্তেজনা প্রশমনে উভয় পক্ষের রাজনৈতিক পর্যায়ে অত্যন্ত গভীর আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সীমান্তের এই অবস্থা চীন-ভারতের পুরো সম্পর্ক থেকে আলাদা থাকতে পারে না। যদি সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা না আসে তাহলে একই ভিতের ওপর অন্যান্য সম্পর্ক অব্যাহত থাকতে পারে না।

জয়শঙ্কর এমন এক সময় এই মন্তব্য করলেন যখন চীন অভিযোগ করে বলেছে যে, লাদাখের প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরে বিরোধপূর্ণ সীমান্ত অতিক্রম করে টহলরত চীনা সৈন্যদের সতর্ক করতে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে ভারতীয় সৈন্যরা।

তবে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সীমান্ত সমঝোতা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ চীন এনেছে তা ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে ডি-ফ্যাক্টো সীমান্তে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি অবস্থানের সময় চীনা সৈন্যরাই গুলিবর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামরিক, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্তরে যখন আলোচনা চলছে, তখন চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি পরিষ্কারভাবে চুক্তি লঙ্ঘন এবং আক্রমণাত্মক কৌশল পরিচালনা করছে।

জয়শঙ্কর বলছেন, চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভিত্তি হলো সীমান্তে স্থিতিশীলতা। গত ৩০ বছরের দিকে তাকালে দেখা যায় সীমান্তে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ছিল– সেখানে সমস্যাও ছিল। আমি এটাকে অগ্রাহ্য করছি না; যা সম্পর্কের বাকি অংশগুলোকে চালিত করে।

তিনি বলেন, ফলে চীন (ভারতের) দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে উঠেছে… স্পষ্টতই সীমান্তের শান্তি ও স্থিতিশীলতাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি।

ভারতীয় এই মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে আমি উল্লেখ করছি যে, গত মে মাসের শুরু থেকেই এই গুরুতর পরিস্থিতি চলে আসছে। এর সমাধানের জন্য রাজনৈতিক পর্যায়ে উভয়পক্ষের খুব গভীর আলাপচারিতার প্রয়োজন।

গত জুন থেকে লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। বিতর্কিত এই সীমান্তে চীনা-ভারতীয় সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয় গত ১৫ জুন। ওইদিন হাতাহাতি, কিল-ঘুষি লাথিতে ভারতের অন্তত ২০ সৈন্য নিহত হয়।

কয়েক দশকের মধ্যে প্রথম প্রাণঘাতী এই সংঘাতে চীনা সৈন্যরাও হতাহত হয়েছেন বলে দাবি করে ভারত। যদিও বেইজিং এ ব্যাপারে কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি।

হিমালয় অঞ্চলে প্রতিবেশি দুই দেশের সীমান্ত বিরোধ কয়েক দশক ধরে চলে এলেও কোনও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি বেইজিং-দিল্লি। গত জুনের ওই সংঘাতের পর থেকে সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হলেও উত্তেজনা কমেনি; বরং সময়ে সময়ে উত্তেজনায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *