লাদাখে নতুন করে ভারত-চীনের উত্তেজনা
লাদাখে নতুন করে ভারত এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নতুন করে সেনা অবস্থান চাইছে বেইজিং। তাদের দাবি, এই নতুন সেনা অবস্থানই হবে নিউ নর্মাল বা চূড়ান্ত পদক্ষেপ। এর ফলেই লাদাখে শান্তি ফিরবে বলে নিশ্চয়তা দিচ্ছে তারা। তবে এই প্রস্তাবে স্বাভাবিকভাবেই রাজি নয় নয়াদিল্লি।
ভারত বলছে এটা চীনের নতুন পদক্ষেপ। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচটি সেনা স্তরের বৈঠকে সুবিধা করতে না পেরে নতুন করে জটিলতা বাড়াতে চাইছে চীন। নয়াদিল্লি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, কোনভাবেই ভারতীয় সেনারা পিছু হটবে না। কারণ পঞ্চম দফা বৈঠকের পরেও বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা সরায়নি চীন।
নতুন করে ৩৫ হাজার সেনা মোতায়েন করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারতীয় সেনারা সরে গেলে চীনা সেনারাও সরে যাবে বলে দাবি করেছে। কিন্তু তাদের এই দাবি মানতে নারাজ নয়াদিল্লি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের জন্যই ক্রমশ তলানিতে নেমেছে ভারত চীন সম্পর্ক। ভারত বলছে, ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার ৪য়ে চলে এসেছে চীন। পরে ভারতের চাপে ফিঙ্গার ৫য়ে সরলেও সেখান থেকে পুরোপুরি সরে যেতে রাজী নয় বেইজিং।
উল্লেক্য, ডেপসাং ও গোগরা এলাকা খালি করে সরে যাওয়ার কথা ছিল চীনের। কিন্তু সে কথা তারা রাখেনি। একদিকে যখন চীন একাধিকবার ভারতের সঙ্গে বৈঠকে বসছে, তখন নতুন করে সীমান্তে চীনা সেনাদের আনাগোনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। চীনের এই দ্বৈত মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছে নয়াদিল্লি।
এর মধ্যেই চীন চাইছে এপ্রিল-মে মাসে যেখানে ভারতীয় সৈন্যরা অবস্থান করত সেখানেই তারা ফিরে যাক। তবে এই জটিলতায় চীনা সেনাদের একচুলও জায়গা ছাড়তে নারাজ ভারত।
উত্তরাখন্ডের লিপুলেখ, উত্তর সিকিমের বেশ কিছু সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা, অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে চীন। উত্তরাখন্ডের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন লিপুলেখ এলাকায় টহল দিয়েছে চীনের সৈন্যরা। সেখানে সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে বেইজিং।
এই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে অরুণাচল প্রদেশ সফরে গেছেন ভারতের সেনা প্রধান এম এম নারাভানে। গত ৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান আসামের তেজপুরে পৌঁছান। দু’দিনের সফরে তিনি ঘুরে দেখবেন দেশের উত্তরপূর্ব প্রান্তের সীমান্ত পরিস্থিতি। তেজপুরে গজরাজ কর্পসের সদর দফতরে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহান। সঙ্গে ছিলেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ।