রোহিঙ্গা শিবিরে করোনাভাইরাস ঠেকাতে তৎপর সহায়তাকর্মীরা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে তৎপর হয়েছেন মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর কর্মীরা।
শুক্রবার তারা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের আইসোলেনশন সেন্টার ও হ্যান্ডওয়াশিং সেন্টার স্থাপন করেছেন বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গার শিবিরগুলোতে ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছেন সহায়তার কর্মীরা।
তিন রোহিঙ্গা শরণার্থীর করোনাভাইরানস ধরা পড়ার পর ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আন্দ্রেজ মাহেকিক বলেন, “তদন্ত দল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। রোগীদের আইসোলেশনের রাখা ও চিকিত্সার পাশাপাশি তাদের সংস্পর্শে সন্ধানের চেষ্টা চলছে।
“এই মহামারীর মধ্যে এই জনগোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।”
বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রায় চার হাজার শরণার্থীকে তাদের ব্লক থেকে বের না হতে বলা হয়েছে।
“আমরা মার্চ মাস থেকে প্রস্তুত থাকায় ক্যাম্পগুলিতে এতোদিন ভাইরাস ঢুকতে পারেনি। আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি।”
জাতিসংঘ বলছে, জনাকীর্ণ শিবিরগুলিতে প্রায় আড়াইশ আইসোলেশন বেড বসানো হয়েছে। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোও ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সংস্পর্শহীন ওয়াশিং স্টেশনও বসাচ্ছে।
অক্সফাম বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপঙ্কর দত্ত বলেন, প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪০ হাজার মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। এক টয়লেট অনেকে ব্যবহার করায় বিষয়টি আরও কঠিন হবে।
সামনের দিনে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস এসব শরণার্থীদের আরও দুর্ভোগ বাড়াতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।
২২ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শরণার্থী রেজওয়ান খান বলেন, তারা খুব ভয়ে আছেন। লোকজন তেমন একটা বের হচ্ছে না।
কক্সবাজারের উখিয়ায় গাদাগাদি করে শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে বৃহস্পতিবারই প্রথম একজন কোভিড-১৯ রোগী ধরা পড়ে।
শুক্রবার নমুনা পরীক্ষায় আরও তিন রোহিঙ্গার দেহে করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবর রহমান।
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে আছে। তাদের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটার পর গত ১১ মার্চ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অবরুদ্ধ করা হলেও তার মধ্যেই সংক্রমণ ঘটল।
রোহিঙ্গা শিবিরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিয়ে উদ্বেগ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের।