রিশান ফরাজীর দায় স্বীকার
রিফাত হত্যাকাণ্ড…
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বরগুনার শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রিশান ফরাজী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গ্রেপ্তার সবার জবানবন্দি নেওয় হলো। এখনও এ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে ধরা যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, এ পর্যন্ত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১৫ জন আসামি ধরা পড়েছে। তারা সবাই হত্যার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টার দিকে রিশান ফরাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে। রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগেই রিশান ফরাজী আদালতে হাজির করা হয়। জবানবন্দি শেষে রিশান ফরাজীকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে আহত করে একদল যুবক। বরিশাল নেওয়ার পথে ওইদিন বিকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
এ মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে সাক্ষী করা হলেও পরে রিফাতের বাবা মিন্নির বিরুদ্ধে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন। পরে পুলিশ মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে এবং মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে, মিন্নি স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তবে আদালত যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবেদন করতে বলেছে। মিন্নির আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম বলেন, মিন্নিকে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মিন্নিকে আদালতে তলব করে জবানবন্দি প্রত্যাহার ও হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি দিতে বিচারকের কাছে আবেদন করেছিলেন। বিচারক তার আবেদন ফেরত দিয়ে কারাকর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে বলেছে।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে এখনও চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এরা হলেন মামলার ৫ নম্বর আসামি মুসা, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদার। আগামী ৩১ জুলাই মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্য রয়েছে।