May 5, 2024
জাতীয়

রিফাত হত্যা: রিশান ফরাজী রিমান্ডে

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বরগুনায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার আসামি রিশান ফরাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী শুক্রবার এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক হুমায়ূন কবীর বলেন, রিশানকে আদালতে হাজির করে পুলিশের পক্ষ থেকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বরগুনায় পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে রিশানকে গ্রেপ্তারের খবর দেন। তবে কোথা থেকে তাকে ধরা হয়েছে, সে তথ্য তিনি দেননি। বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে রিশান ও তার ভাই রিফাত ফরাজী এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের সহযোগী। পুলিশ দুই সপ্তাহ আগে রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার করলেও নয়ন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গত ২ জুলাই নিহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

গত ২৫ জুন সকালে জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়। রিফাতের ওপর হামলার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। আর তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজীর নাম বলেছিলেন।

রিফাত খুন হওয়ার পরদিন তার বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় মামলা করেন। সেখানে ১ নম্বরে নয়ন, ২ নম্বরে রিফাত ফরাজী এবং ৩ নম্বরে রিশান ফরাজীর নাম ছিল। এজাহারে মামলার ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। কিন্তু দুলাল শরীফ চার দিন আগে পুত্রবধূর বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলার পর আলোচনা নতুন দিকে মোড় নেয়।

দুলাল শরীফের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি সাব্বির আহমেদ নয়নের (নয়ন বন্ড) সঙ্গে বিয়ে গোপন করেই তার ছেলে রিফাত শরীফকে বিয়ে করেন মিন্নি। বিয়ের পরও নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।

এরপর মঙ্গলবার সকালে মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বুধবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

আদালতে মিন্নি বলেন, আমার স্বামী রিফাত শরীফ। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডে আমি জড়িত নই। এ মামলায় আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।

তবে রিশান ফরাজীকে গ্রেপ্তারের কথা জানাতে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, যারা হত্যাকারী ছিল শুরু থেকে মিন্নি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে এবং সে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার অংশ। এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পূর্বেও সে পরিকল্পনার জন্য মিটিং করেছে হত্যাকারীদের সাথে।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে আটজন এজাহারভুক্ত আসামি। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *