May 18, 2024
আন্তর্জাতিক

যে নারীকে দিয়ে আরেকটি রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বাইডেন

চলতি বছরের ৩ নভেম্বর (সোমবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

এই ভোটে এখন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন জো বাইডেন।

এই নির্বাচনে বিভিন্ন রেকর্ড দেখেছে আমেরিকা।

দেশটির নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৬ কোটির বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন এবার। নির্বাচিত ও পরাজিত দুই প্রার্থীই পেয়েছেন রেকর্ড ভোট। সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রার্থী হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন।

প্রথমবারের মতো নারী ও কৃষ্ণাঙ্গ ভাইস প্রেসিডেন্ট পাচ্ছে দেশটি। এর সুবাদে নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা দেবী হ্যারিসের স্বামী ডগলাস এমহফ হচ্ছেন দেশটির প্রথম ‘সেকেন্ড জেন্টেলম্যান। আলোচ্য রেকর্ডগুলো হয়েছে ভোটের ফল চূড়ান্ত হওয়ার পরেই।

এবার আরেকটি রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন নতুন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। পেন্টাগনের মতো স্পর্শকাতর স্থানে প্রধান করতে যাচ্ছেন আরও একজন নারীকে। তিনি হলেন মিশেল ফ্লাওনোয়ি।

এ খবর জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে বাইডেন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক নারীকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে পেন্টাগনের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এবং বারাক ওবামার আমলে আন্ডার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মিশেল ফ্লাওনোয়িকেই পরবর্তী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন বাইডেন। আর তা সত্যি হলে মিশেল ফ্লাওনোয়ি প্রথম নারীপ্রধান হচ্ছেন পেন্টাগনের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পেন্টাগনের ইতিহাসে গত চার বছর ছিল সবচেয়ে অস্থির সময়। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই মেয়াদকালে পেন্টাগনের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে এসেছেন পাঁচজন।

সর্বশেষ এই পদ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে মার্ক এসপারকে।

সংবাদমাধ্যমটি জানাচ্ছে, মিশেল যদি শেষ পর্যন্ত এই পদে মনোনীত হয়, তবে তাকে শুরুতেই বেশ ঝামেলা সামলাতে হবে। বাইডেনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বিতরণে সেনাসদস্যদের কাজে লাগাতে হবে তাকে। শুধু তা-ই নয় এ কাজ করতে হবে তাকে কম টাকার মধ্যেই।

জো বাইডেনের উপদেষ্টাদের একজনের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেমোক্র্যাটরা অনেক আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে নারীদের নিয়োগ দিতে চাইছে; বিশেষত যেসব পদে নারীরা এর আগে কখনো আসেননি, সেসব পদে তাদের নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা অনেক আগের।

২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটন জয়ী হলে মিশেল ফ্লাওনোয়িকে পেন্টাগনের প্রধান হিসেবে আনার পরিকল্পনা ছিল। এ কারণে বাইডেনের সম্ভাব্য মন্ত্রিসভায় ফ্লাওনোয়ির থাকাটা এক ধরনের নিশ্চিত ধরা যায়।

মিশেল ১৯৯০ সালে পেন্টাগনের সঙ্গে যুক্ত হন। সর্বশেষ বারাক ওবামার আমলে ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আন্ডার সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর পলিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

উদারনৈতিক হিসেবে পরিচিত ৫৯ বছর বয়সী ফ্লাওনোয়ি বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষানীতি নিয়ে সতর্ক; বিশেষত গত বছর এ নিয়ে তিনি প্রচুর কথা বলেছেন।

সর্বশেষ গত মার্চে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রশাসন ট্রাম্প বা বাইডেন যার হাতেই যাক না কেন, তার অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়, এমন ধারণার বদল ঘটাতে সচেষ্ট হওয়া।

তবে তাড়াহুড়ো করে খুব বড় কোনো পরিবর্তন আনার পক্ষেও নন তিনি।

তার মতে, প্রশাসন ও প্রশাসনে থাকা দল পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বদলে ফেলা বাজে প্রবণতা। ক্ষমতা নিয়েই পূর্ববর্তী সব কাজকে ভুল সাব্যস্ত করে বড় ধরনের ভুলের দিকে পা বাড়ানো।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *