‘যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো’
মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনের সঙ্গে আমরা একমত নই জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বরং অনেকক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় পাম ভিউ রেস্তোরাঁয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাহফিলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘মাহে রমজান ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদনটি আমি দেখেছি। আমরা এই প্রতিবেদনের বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্যের সঙ্গে একমত নই। আমরা মনে করি, এ প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত নির্দিষ্ট কিছু সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সূত্রগুলো একপেশে ও অনেক ভুল তথ্য সরবরাহ করায় প্রতিবেদনটি এমন হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রকৃতপক্ষে অনেকক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো, সবক্ষেত্রে না হলেও। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বে’তে যেভাবে মানুষকে নির্যাতন করা হয়, সে ধরনের কোনো কারাগার আমাদের দেশে নেই। যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের দেশে কখনো এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হয়নি। মার্কিন পার্লামেন্টে যেভাবে হামলা করে চারজনকে হত্যা করা হয়েছে, স্পিকারের চেয়ারে দুষ্কৃতকারী বসে ছিল, এমন কোনো ঘটনা আমাদের দেশে ঘটেনি। গত ১০ বছরের পরিসংখ্যানমতে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে নিহতদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু। এসব কারণে অনেকক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো।
মার্কিন এই প্রতিবেদন পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে বিচার বিভাগ অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করে। সে কারণেই সরকারের বিরুদ্ধে রায় হয় ও সরকারি দলের এমপিরা জেলে যায়।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মানবাধিকার রিপোর্টে যে নিরাপত্তা বাহিনীর কথা আছে, সেই নিরাপত্তা বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা পাচ্ছে। এ কারিগরি সহায়তাসহ অন্যান্য বিষয়ে সহায়তার মাধ্যমে আমাদের যদি কোনও ত্রুটিও থেকে থাকে- তা ভবিষ্যতে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে চলতি বছর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির আভাস দিয়েছে। করোনা পরবর্তীতে যে আমাদের অর্থনীতি সুদৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটিও বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে। যারা রাত-বিরাতে সমালোচনা করেন, আমি আশা করবো তারা এই রিপোর্টের পর বিরূপ সমালোচনা বন্ধ করবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এতে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন প্রমুখ।
এ সময় অতিথিরা বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।