April 27, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

যারা বাংলাদেশের ক্ষতি করবে এমন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নয়

যারা বাংলাদেশের ক্ষতি করবে এবং যারা বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবহার করে নিজেদের আক্রমণাত্মক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে এমন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্ক করবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাজধানীতে একটি সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) ‘চেঞ্জিং গ্লোবাল অর্ডার: সিকিউরিং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সব দেশ নিয়ে বাংলাদেশ এরই মধ্যে গবেষণা করেছে। এখন বাংলাদেশ সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক করতে প্রস্তুত। তবে যারা বাংলাদেশের ক্ষতি করবে এবং যারা বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবহার করে নিজেদের আক্রমণাত্মক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে, এমন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক করবে না বাংলাদেশ। এভাবেই বাংলাদেশের সার্বভৌম স্বার্থকে রক্ষা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা ‘প্রথম যুক্তি নীতিতে’ বিশ্বাসী এবং পারস্পরিক অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য অংশীদারিত্বে বিশ্বাসী। এভাবে আমরা আমাদের সার্বভৌম জাতীয় স্বার্থকে কল্পনা করি ও অর্জন করি। আমি বিশ্বাস করি যে; কৌশলগত অবস্থান, সমৃদ্ধ জনশক্তি সুবিধা ও শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার; আমাদেরকে দাবাবোর্ডে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় করে তুলেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর মতোই বিশ্বাস করে, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শান্তি অপরিহার্য’। তাই, বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার সুনাম, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দিন।’

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল দেশ এবং এ দেশের জনগণ উন্নত নৈতিকতার ধারক ও বাহক। ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে মহামারি পর্যন্ত, বন্যা থেকে খরা পর্যন্ত, আমরা আমাদের সাহস, আমাদের সহনশীলতা দেখিয়েছি। আমরা বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছি।’

বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে কিছু উপাদান রয়েছে যার দ্বারা আমরা আক্রান্ত হচ্ছি এবং কিছু উপাদান রয়েছে যা আগামী ৫০-১০০ বছরে আক্রান্ত করতে পারে। আর কেউ কেউ পরিস্থিতি এমনভাবে পরিবর্তন করছে যার ভবিষ্যৎ অপাঠ্য হয়ে পড়েছে। এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আমরা কোন পক্ষে রয়েছি, তা বেছে নিতে হবে। এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে— কেন আমরা কোন পক্ষ অবলম্বন করব।’

শক্তিধর দেশগুলো প্রতিনিয়ত নতুন ফোরাম নিয়ে আসছে জানিয়ে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘অনেক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদার ফোরাম তৈরি হচ্ছে। আমরা বেল্ট ও রোড উদ্যোগ দেখেছি, আমরা কোয়াড দেখেছি, অ্যাপেক দেখেছি। আর সম্প্রতি আমরা ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক দেখেছি।’

সেমিনারে ওয়ার্কিং সেশনে পরিবর্তিত পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার দৃষ্টিকোণ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রাশেদুজ্জামান, বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাংলাদেশের জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে বিআইআইএসএসের গবেষক রাজিয়া সুলতানা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির ওপর বিআইআইএসএসের গবেষক এএসএম তারেক হাসান শিমুল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মুবিন চৌধুরী সেমিনার সঞ্চালনা করেন।

এমআর

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *