যশোরে ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
যশোরের মণিরামপুরে দুই মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের
অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষককে এখনও
গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গতকাল শুক্রবার অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষকের
বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ধর্ষণের
ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষক হলেন- মণিরামপুর উপজেলার মোড়লপাড়ার দাখিল
মাদ্রাসার ফিকাহ বিষয়ক শিক্ষক ঝাঁপা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও কৃষি
বিষয়ক শিক্ষক খানপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম।
এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,
আসন্ন দাখিল পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরীক্ষার্থীদের রাত ১১টা পর্যন্ত
মাদ্রাসার মধ্যে কোচিং করানো হয়। প্রতিরাতেই মাদ্রাসার দুই শিক্ষক এ
কোচিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার শিক্ষক নজরুল
ইসলাম ও শিক্ষক তরিকুল ইসলাম কোচিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
ওই দিন রাত ১০টার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই পরীক্ষার্থী ওয়াশরুমে গেলে
অভিযুক্ত শিক্ষকরা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়। সেই সময় ওই পরীক্ষার্থীর
মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে বাথরুমের পাশের বাঁশ বাগানে নিয়ে গিয়ে তাকে
ধর্ষণ করে। এতে সে জ্ঞান হারালে তাকে বাঁশবাগানে ফেলেই ওই দুই শিক্ষক
মাদ্রাসার কোচিংয়ে ফিরে আসে।
কোচিংয়ে ঢুকেই তারা ওই পরীক্ষার্থী সম্পর্কে জানতে চাইলে সে
(পরীক্ষার্থী) ওয়াশরুমে গেছে বলে জানায় অন্য সহপাঠীরা। সেই সময় তার
খোঁজ করার নির্দেশ দেয় শিক্ষক। এসময় সহপাঠীরা বাথরুমের পাশে বাঁশ
বাগান থেকে অচেতন অবস্থায় ওই পরীক্ষার্থীকে উদ্ধার করে কোচিংয়ে নিয়ে
আসে। সেই সময় তার শরীর থেকে প্রচণ্ড রক্ত ঝরলে ওই শিক্ষকরা বলেন, জ্বীনে
কিছু একটা করেছে। অন্যান্য পরীক্ষার্থীদেরকে ভিকটিমের পরিবারের
লোকজনকে খবর দিতে বলেন। মাদ্রাসার পাশে ভিকটিমের বাড়ি হওয়ায়
পরিবারের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে যশোরের একটি বেসরকারি
হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ওই পরীক্ষার্থীকে বাড়ি নিয়ে গেলে
ঘটনা জানাজানি হয়। পরে ভিকটিমের সহপাঠী ও স্থানীয়রা মিলে শিক্ষক
নজরুল ইসলামকে গণপিটুনি দিয়ে বেঁধে রাখে। কিছু সময় পর সে
কৌশলে পালিয়ে যায়। গণপিটুনির খবর পেয়ে অভিযুক্ত অপর শিক্ষক তরিকুল
ইসলাম মাদ্রাসাতেই আসেনি।
মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই পরীক্ষার্থীর
বাবা দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের সত্যতা
পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।