April 19, 2024
আঞ্চলিকজাতীয়

মোংলা ইপিজেডে এক দশকে রফতানি বেড়েছে ১৬ গুণ, আমদানি ১১ গুণ

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মোংলা ইপিজেডের বাণিজ্য বেড়েই চলেছে। বর্তমানে এখানে ১২৮টি কারখানা চালু রয়েছে এবং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ১৫টি কারখানা। ইপিজেড সূত্রে জানা যায়, এখানে এখন কাজ করে কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার নারী-পুরুষের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। গত ১০ বছরে ইপিজেড এর রফতানি বেড়েছে ১৬ গুণ ও বিনিয়োগ বেড়েছে ১১ গুণ।
বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়া অঞ্চল (বেপজা) এর মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৮ সালে ২৮৯ একর জমির ওপর মোংলা ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইপিজেড ও বন্দর অচল হয়ে যায়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত দশ বছরে এই ইপিজেডের অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৮ সালে মোংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ করা হয়েছিল ৪৫ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালে বিনিয়োগ হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা। বিগত দশ বছরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ গুণ। আর ২০০৮ সালে ইপিজেড থেকে রফতানি হয়েছিল ২৯৫ কোটি টাকার পণ্য, সেখানে ২০১৮ সালে পণ্য রফতানি হয়েছে চার হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। সেই হিসেবে ১৬ গুণ রফতানি বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, আগে মোংলা এলাকার অর্থনীতি ছিল কৃষি (ধান) ও মাছ নির্ভর। কিন্তু বর্তমানে ওয়ার্কাররা টয়োটা গাড়ির হিটিং প্যাড, ভিআইপি লাগেজ ব্যাগ, নর্থ আমেরিকার টাওয়েল, ফ্যাশন উইক, পাটজাত পণ্য, সুপারি পণ্য, মার্বেল পাথর সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত আছেন। এসব পণ্য ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। এটা দেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলেও মনে করেন তিনি।
মোংলা ইপিজেডে কর্মরত নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আগে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো। স্বামীর আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালানো যেতো না। এখন আমি ইপিজেডে কাজ করি। দশ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার এবং স্বামীর দুই জনের আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া-জামা-কাপড় এবং দৈনন্দিন বাজারের সব খরচ পূরণ করতে পারছি।’
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ‘ইপিজেডে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইপিজেডের কারণে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।’
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘মোংলা বন্দরের আশেপাশে যাতে শিল্পায়ন হয়, বন্দর যাতে গতিশীল হয়, সেই বিবেচনায় ১৯৯৮ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোংলা ইপিজেড কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু ২০০১ সাল বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইপিজেড ও বন্দর অচল হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আবারও ইপিজেড এবং বন্দর সচল হয়। এখন ৪-৫ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এই ইপিজেডে। এই অঞ্চলের জন্য ইপিজেড অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে এই অঞ্চল আলোকিত হবে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ট্রাফিক ম্যানেজার মো. সোহাগ বলেন, ‘মোংলা ইপিজেড সৃষ্টি করা হয়েছিল মোংলা বন্দর সচল করার জন্যই। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ইপিজেডে খালি প্লট খুবই কম। ইপিজেডে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়েছে। কাঁচামাল মোংলা বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মোংলা বন্দরের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *