মুসলিমদের বিরুদ্ধে করোনা ছড়ানোর অভিযোগ, অপপ্রচার বলছে ভারত
ভারতে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে মুসলিম বিদ্বেষ। আতঙ্কে ভুগছেন দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। এমনকি আরবের বিভিন্ন দেশ থেকে টুইট করে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে দিচ্ছেন মুসলমানরা, এই অজুহাতে দেশটির বেশ কয়েকটি জায়গায় আক্রমণ করা হচ্ছে মুসলিমদের ওপর।
তবে এই অভিযোগের তীব্র সমালোচনা করেছে ভারত। জানানো হয়েছে, এগুলো পুরোপুরিই অপপ্রচার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব কড়া ভাষায় জানিয়েছেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং এই সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত সরকার। তাই আশা করা হচ্ছে, তারা এ দেশের কোনো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না। যদি হস্তক্ষেপের কেউ চেষ্টা করেন, তবে তা মেনে নেওয়া হবে না।
আরবের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ এবং ঐতিহ্যবাহী সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি আরও বলেন, রমজানের সময় ওই দেশের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব বজায় রাখতে সেদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে যাবে নয়াদিল্লি।
অনুরাগ শ্রীবাস্তব এ কথাও বলেন, বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ করোনা ভাইরাসের পরবর্তী অর্থনৈতিক দৈন্যতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে। এটা ভেবে দেখতে হবে। এছাড়া যে দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে, সেই দেশগুলোর পক্ষ থেকে যদি স্ট্রে টুইট ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা সহ্য করা যায় না।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের বেশ কয়েকটি অংশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার দায় চাপানো হচ্ছে মুসলমানদের ওপর, এই অভিযোগে আরবের বিভিন্ন দেশ থেকে সমাজকর্মী ও অন্যান্য সচেতন নাগরিক টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি ৫৭টি দেশের জোট ওআইসি-ও সম্প্রতি ভারতে ‘ইসলামফোবিয়া’ সৃষ্টির অভিযোগ করেছে। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগকে অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, আমরা এই দেশগুলোতে রমজানের সময়ে যে বিপুল পরিমাণ খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রয়োজন হয়, সেসবের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ প্রচেষ্টা করছি। এই পরিস্থিতিতেও আমাদের এই প্রচেষ্টা সর্বস্তরে প্রশংসিত। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এই দেশগুলোও ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়।
তিনি বলেন, ওই দেশগুলো ভারতকে ওষুধ ও চিকিৎসা দল পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছে। আমরা ইতোমধ্যেই কুয়েতে একটি র্যাপিড রেসপন্স টিম পাঠিয়েছি। এরপরেও তারা ভারত থেকে চিকিৎসক ও নার্স পাঠানোর অনুরোধ করেছে।