May 2, 2024
জাতীয়

মাস্টার-সুকানির ‘অদক্ষতায়’ পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা

নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা দেয়ার জন্য ফেরি শাহজালালের মাস্টার ও সুকানিকে দায়ী করেছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি। মাস্টার ও সুকানির ‘অদক্ষতা ও অসতর্কতা’য় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে কমিটি।

রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে তদন্ত কমিটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্যিক) এস এম আশিকুজ্জামান বিকেলে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল পৌনে ১০টার দিকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে রো রো ফেরি শাহজালালের পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির ২০ যাত্রী আহত হন।

ওইদিনই এ ঘটনা তদন্তের জন্য বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক আশিকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক মো. শাহজাহান, বিআইডব্লিউটিসির এজিএম (মেরিন) আহমেদ আলী, বিআইডব্লিউটিসির এজিএম (ইঞ্জিনিয়ারিং) রুবেলুজ্জামান।

কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আশিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আজ (রোববার) দুপুরে চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। ফেরির মাস্টার আব্দুর রহমান ও সুকানি সাইফুল ইসলামকে এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে। তাদের অসতর্কতা ও অদক্ষতার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

প্রতিবেদনে তিনটি সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে আশিকুজ্জামান বলেন, ‘বর্ষার সময় এখানে প্রচণ্ড স্রোত থাকে তাই এই সময়ে দুর্বল ফেরিগুলো এ রুটে ব্যবহার না করার জন্য বলা হয়েছে।’

এই তিন সুপারিশের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু যেহেতু জাতীয় সম্পদ এই সম্পদ রক্ষার জন্য শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরি সার্ভিসের রুটটি পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। এজন্য বাংলাবাজার ঘাটটি স্থানান্তর করে মাঝিরকান্দি নিয়ে আসা অথবা শিমুলিয়া ঘাটটি স্থানান্তর করে পুরোনো মাওয়া ঘাটে নিয়ে যাওয়া এবং সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি চলাচল না করার সুপারিশ করা হয়েছে।’

কমিটির আহ্বায়ক বলেন, ‘সেতুর নিচ দিয়ে ফেরি পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিন এখানে ফেরির ১০০টির মতো ট্রিপ হয়, মাসে হয় ৩ হাজার ট্রিপ। এর মধ্যে কোনো কারণে একটি দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। এজন্যই এ সুপারিশ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতুর পিলারগুলোতে পাইলক্যাপ করা আছে, তারপরও পিলারের চারপাশ রাবারের পেন্ডার বা রাবার দিয়ে মুড়িয়ে দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। যদি কোনো কারণে কোনো নৌযানের সঙ্গে ধাক্কাও লাগে তবে ধাক্কাটা কম লাগবে। পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’

দুর্ঘটনার পরে ফেরি শাহজালালের ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। শিবচর থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *