ভোটের মাঠেও আলোচনায় তারা
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে এক ভিন্ন আমেজ নিয়ে এসেছেন দেশটির চলচ্চিত্র তারকরা। ভোট চাইতে তারা যেমন জনগণের কাছাকাছি আসছেন তেমনি ভোটের আলোচনায়ও অনেকের মুখেই চলে আসছে তাদের কথা।
শুক্রবার কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় মানুষজনের মুখে মুখে ছিলও সেই আলোচনারই প্রতিধ্বনি।
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় নামের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ থেকে এসেছেন নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে। বেশ তো! আপনি যাদবপুর যান দেখবেন প্রচারণা কেমন সরগরম। কারণটি কি জানেন? মিমি চট্টোপাধ্যায় লড়ছেন। সেলিব্রেটি বলেই কথা!
নির্বাচনে যাদবপুরে প্রার্থী হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় মুখ মিমি চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে লড়ছেন তিনি।
‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘যোদ্ধা দ্য ওয়ারিয়র’, ‘খাদ’, ‘জামাই-৪২০’, ‘টোটাল দাদাগিরি’-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে এই অভিনেত্রী। মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকেও অভিনয়ের জন্য খ্যাতি রয়েছে মিমির।
তার মতো আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহানও নির্বাচনে লড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে। চব্বিশ পরগণার বসিরহাটে প্রার্থী হওয়া নুসরাত আগে কখনও রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না হলেও ভোটের মাঠে তিনি কম যাচ্ছেন না।
‘শক্র’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে টালিউডে যাত্রা শুরু নুসরাতের। এরপর ‘খোকা ৪২০’, ‘খিলাড়ি’, ‘কেলোর কীর্তি’, ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এ সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের কাতারে তিনি।
মিমি ও নুসরাতের আসনে ভোটগ্রহণ হবে ১৯ মে, ভারতের পঞ্চম ধাপের ভোটের শেষ দিনে।
মিমি ও নুসরাত ছাড়াও পশ্চিম মেদিনিপুরের ঘাটাইল আসনে দেব, আসানসোল আসনে মুনমুন সেন, বীরভূম আসনে শতাব্দী রায়, হুগলিতে লকেট চট্টোপাধ্যায়, হাওড়া আসনে জর্জ বেকার, চন্ডিগড় আসনে কিরন খের ও গুল পানাং প্রমুখ তারাকারা ভোট করছেন।
সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীপুর আসনে বাপ্পী লাহিড়ী, বহরমপুর আসনে ইন্দ্রনীল সেন, মালদহ আসনে সৌমিত্র রায়, আসনসোল আসনে বাবুল সুপ্রিয় রয়েছেন ভোটের লড়াইয়ে।
পাঁচ বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে অভিনেতা দেব (দীপক অধিকারী), অভিনেত্রী মুনমুন সেন, সন্ধ্যা রায়, শতাব্দী রায় ও তাপস পাল বিজয়ী হয়ে সংসদে যান।
পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এবার পূর্ব মুম্বাই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নব্বই দশকের পর্দা কাঁপানো ‘রঙ্গিলা’ খ্যাত অভিনেত্রী উর্মিলা মার্তন্ডকার। রাহুল গান্ধীর কংগ্রেসের টিকেটে ভোট করেছেন তিনি। উর্মিলা ছাড়াও এক সময় বলিউডের জনপ্রিয় খলনায়ক শত্রুঘ্ন সিনহা বিজেপি ছেড়ে এবার যোগ দিয়েছেন রাহুলের দলে।
রুপালী পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে ভোটে রয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মথুরা আসনে হেমামালিনী, উত্তর প্রদেশের গজিয়াবাদ আসনে রাজ বাব্বর, লক্ষ্ণৌ আসনে পুনম সিনহা, রামপুর আসনে জয়া প্রদা, বিহারের পাটনা আসনে শত্রুঘ্ন সিনহা, গুজরাটের পূর্ব আহমেদাবাদ আসনে পরেশ রাওয়াল।
নির্বাচনী সভায় রাজনৈতিক নেতারা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিলেও পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচার নিয়ম-নীতি মেনেই চলছে বলে জানালেন ঘাটালের দীপালী রায়।
দিল্লি যাওয়ার উদ্দেশে বিমানবন্দরে আসা দীপালী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ভোটে অন্যরকম চিত্র দেখবেন। পোস্টার-প্রার্থীদের প্রচারণার জমজমাট পরিবেশ রয়েছে। তবে যততত্র প্রার্থীর পোস্টার দেখবেন না। রোড শো হয় কিন্তু যখন তখন মিছিল দেখবেন না। এক অন্যরকম প্রচারণা কলকাতায়।”