April 19, 2024
জাতীয়

ভালোবাসা দিবসে যে আন্দোলনের কথা এ প্রজন্ম মনে রাখেনি

অনলাইন ডেস্ক

সময়টা ১৯৮২ সাল, ক্ষমতায় তখন হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ এবং এ সময় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডক্টর মজিদ খানের প্রণীত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিল শিক্ষার্থীরা। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর সকল ছাত্র সংগঠন একজোট হয়ে আন্দোলন করতে শুরু করে, শুরু হয় প্রচণ্ড আন্দোলন।

এরপর ১৯৮২ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ তৎকালীন শিক্ষানীতি প্রত্যাহার , আটক বন্দীদের মুক্তি এবং গণতন্ত্র অধিকার দাবি ও বৈজ্ঞানিক এবং অসাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি দাবিতে ছাত্র জমায়াতের ডাক দেয়। সে সময় হাজার হাজার ছাত্র দের নেতৃত্বে হয় বিশাল মিছিল যার একদম সামনের দিকে ছিল মেয়েরা।

মিছিলটি হাইকোর্ট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকায় এবং এক পর্যায়ে পুলিশের জলকামান ছাত্রদের উপর গরম পানি ছিটাতে শুরু করে। এবং একই সাথে পুলিশ অ্যাকশনে যায়, শুরু হয় লাঠিচার্জ ও গুলি। এতে গুলিবিদ্ধ হন জয়নাল নামক একজন ছাত্র এরপর জয়নালকে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হয়। এই অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিহত এবং আহতদের আনার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পাঠালে পুলিশ ঢুকতে দেয়নি সেদিন। জয়নাল ছাড়াও জাফর মোজাম্মেল আইয়ুব ও দিপালী সাহা সহ অন্তত ১০ জন নিহত হন নিখোঁজ হন আরো অনেক সরকারি হিসাব অনুযায়ী গ্রেফতারের সংখ্যা হল ১৩৩১ জন ছাত্র কিন্তু বাস্তবে এর সংখ্যা আরো বেশি যার মধ্যে  অনেকের খোঁজ কখনো মেলেনি।

এরপরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা ছাড়া চট্টগ্রামে। সেখানে মেডিকেল সহ অন্যান্য করেছে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে পুলিশ সেখানে লাঠিচার্জ করে ও গুলি চালায়। এতে নিহত হন কাঞ্চন। ভয়ঙ্কর এই ঘটনার আগে বাংলাদেশে কখনো ভ্যালেন্টাইনস ডে পালিত হয়নি।

শহীদ জয়নাল

সাবেক ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাধারন সম্পাদক মোস্তাক হোসেন বলেন জয়নাল ছাড়া মোজাম্মেল নামের আরেক জনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল পরে। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারির পর এটাই ছিল ইতিহাসের পাতায় দ্বিতীয় বৃহত্তম ছাত্র আন্দোলন। পরের বছর পরে ভয়ংকর এই দিনটি ভুলিয়ে দিতে ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে হাজির হন তখনকার সরকার। পরের প্রজন্ম কি জানতে দেওয়া হয়নি ভয়ঙ্কর ঘটনা।এর কিছুদিন পর সরকার একটি ঘোষণা দিয়ে শিক্ষানীতিটি স্থগিত করে  ।

প্রসঙ্গত ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালনের আগে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হতো, কিন্তু সেটি আর তেমন দেখা যায় না।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *