April 26, 2024
আন্তর্জাতিককরোনাজাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ভারতের উপহার ২০ লাখ করোনার ভ্যাকসিন পেল বাংলাদেশ

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ভারত সরকার বাংলাদেশকে ভারতে উৎপাদিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে প্রদান করেছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এই ভ্যাকসিনগুলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে হস্তান্তর করেন। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে ভ্যাকসিনগুলি যথাযথ নিয়মানুসারে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার পরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনার ধারাবাহিকতায় ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হওয়ার (১৬ জানুয়ারি ২০২১ শুরু হয়েছিল) এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী প্রথমে নীতির অংশ হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতি ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। তিনি আরও বলেন যে, কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ উপহার আসলে ভারতের দ্বারা প্রতিবেশী কোনও দেশকে দেয়া সবচেয়ে বড় পরিমাণ। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের (অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন) চালানটি ভারতের পুনেতে অবস্থিত সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদন করেছে এবং উপহার দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার তার নিজস্ব কোটা থেকে কিনেছে।
হাই কমিশনার বলেন, ২১ জানুয়ারি একটি যুগান্তকারী দিন – বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নিজস্ব প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে এই ভ্যাকসিনগুলি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিশ্রæতিবদ্ধ অংশীদার হিসেবে ভারত এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে অবদান রাখতে পেরে আনন্দিত। একসাথে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দুই দেশ কর্তৃক ইতোমধ্যে নেওয়া অনেক পদক্ষেপের মধ্যে ভ্যাকসিন উপহার সর্বশেষ উদ্যোগ। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহŸানে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সার্ক নেতাদের একটি ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছিলো। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সম্মিলিত ক্ষমতা, দক্ষতা এবং সংস্থান ব্যবহারের মাধ্যমে সহযোগিতার আহ্বান জানান। এর পরপরই সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। বাংলাদেশ থেকে আগত স্বাস্থ্যসেবাদানকারী, প্রশাসক ইত্যাদি পেশাজীবীরা ভারতের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল ইনস্টিটিউট, যেমন- অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স (এআইএমএস) দ্বারা পরিচালিত অনলাইন সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণগুলিতে অংশ নেয়। হাই কমিশনার বলেন, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের জন্য এআইএমএস, ভুবনেশ্বরে বাংলা ভাষায় আয়োজিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কোর্সটি ছিল এক দুর্দান্ত সাফল্য। ভ্যাকসিন সরবরাহকে সহজতর করার জন্য ১৯-২০ জানুয়ারি ভারত সরকার ‘ট্রেইন দ্য ট্রেনার’ নামক একটি ২ দিনব্যাপী অনলাইন কোর্সও পরিচালনা করেছে।
কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের এই ২০ লাখ ডোজ উপহার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে হস্তান্তর করার পর হাই কমিশনার আশা প্রকাশ করেন যে, দু’দেশের এই ধরনের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে মহামারীকে পরাজিত করা হবে এবং আমাদের জনগণের সুবিধার্থে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখা হবে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন / এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *