April 20, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই ট্রলারের সংঘর্ষ, ১৯ মরদেহ উদ্ধার

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার তিতাস নদে নৌকাডুবির ঘটনায় ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে লইছকা বিলে একটি বালুবাহী ট্রলারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে নৌকাটি ডুবে যায়। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর নৌকার ঘাট থেকে যাত্রীবাহী একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের উদ্দেশে রওনা করে। তিতাস নদের বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইছকা বিলে বালুবাহী একটি ট্রলারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সে সময় যাত্রীবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটির পেছনে আরেকটি বালুবাহী ট্রলার ছিল। এটিও যাত্রীবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটিতে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীবাহী নৌকাটি উল্টে ডুবে যায়। নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল।
আহত যাত্রীরা জানান, প্রথমে ধাক্কা দেওয়া ট্রলারটি দ্রুত পালিয়ে যায়। রাত পৌনে আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত স্থানীয় লোকজন দুটি শিশু, একজন তরুণ, আটজন নারীসহ ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করেন। পরে সদর থানার পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এখন পর্যন্ত যাঁদের পরিচয় জানা গেছে তাঁরা হলেন বিজয়নগর উপজেলার আজমপুরের শিলবাড়ির পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনা বিশ্বাস, জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম ও চম্পকনগরের মিনারা বেগম।
আঁখি আখতার নামের এক যাত্রী বলেন, বিজয়নগরের চম্পকনগর থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় অন্তত ৭০ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে ট্রলারটি। নৌকায় করে আমি, আমার ছেলে, ভাসুরের ছেলে ও শাশুড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসছিলাম। পথে একটি বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। আমি সাঁতরে কূলে উঠতে পারলেও আমার ছেলে, ভাসুরের ছেলে ও শাশুড়ির এখনও সন্ধান পাইনি।
দুর্ঘটনার পর সাঁতরে তীরে ওঠা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত যাত্রী রফিক মিয়া জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসার পথে বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কায় তাদের ট্রলার (ইঞ্জিনচালিত নৌকা) ডুবে যায়। তিনি তার স্ত্রী ও মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
মুরাদ মিয়া জানান, তিনি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়েন। কোনও রকমে সাঁতরে তারা তীরে ওঠেন। অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে উপজেলার লইসকা বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ছয় জনকে ব্রহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে নৌ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ জে এফ জয়

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *