May 3, 2024
করোনাজাতীয়

বেদনাবিধুর বাস্তবতা: বাবাকে সন্তানের শেষ আদর

২০ মে ৪০ বছর বয়সী এক রোগী জীবনের ‘শেষ মুহূর্তে’ চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালে। রোগীকে প্রথম দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম তার জীবনের সময় বেশি নেই। তবু চেষ্টা করেছিলাম আমাদের সামর্থ্য নিয়ে রোগীকে বাঁচাতে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, রোগীর অভিভাবকও বুঝতে পেরেছিলেন রোগীর পরিণতি। করোনা টেস্ট হয়নি কিন্তু সব লক্ষণ করোনা ভাইরাস জনিত। অবশেষে মারাও গেলেন সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর। রোগীর অভিভাবক হিসেবে সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী। স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন তাদের ৭ বছরের একটি সন্তান আছে।

সাধারণত করোনার লক্ষণ নিয়ে কেউ মারা গেলে সিভিল সার্জন অফিসে জানাতে হয়। পরে সিভিল সার্জন নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় দ্রুত তার দাফনের ব্যবস্থা করে। এক্ষেত্রে আত্মীয় স্বজন কারও মৃত ব্যক্তিকে দেখার সুযোগ হয় না।

আমি মৃত রোগীর অভিভাবক স্ত্রীকে বললাম আপনাদের সন্তান তার বাবাকে দেখবে না? উত্তরে তিনি বললেন বাসায় কেউ নেই। ও কীভাবে আসবে। আমি বললাম আপনি বাসায় গিয়ে আপনাদের সন্তানকে নিয়ে আসুন। আমাদের হাসপাতালের গাড়ি নিয়ে যান। তাই হলো।

মা সন্তানকে আমাদের গাড়িতে করে নিয়ে আসলেন। সন্তান তার বাবাকে শেষবারের মতো স্পর্শ করে আদর করলেন। এই এক  বেদনাবিধুর বাস্তবতা।

ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, এমন ঘটনা এই হাসপাতালে প্রথম। রোগীকে বাঁচানোর জন্য যা করা দরকার আমরা করেছি। বিষয়টি আসলে আমাকেও নাড়া দিয়েছে। শিশুটির সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাকে নিয়ে তার বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এটি হয়তো একটি শিশুর গল্প। কিন্তু আরও অনেক গল্প আমাদের আশেপাশে প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমরা তার কোন খবরও রাখছি না। এটাই হয়তো বাস্তবতা।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *