বিমান ছিনতাইচেষ্টার মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ঢাকা থেকে রওনা হয়ে মাঝ আকাশে বিমান ছিনতাইচেষ্টার মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অভিযোগপত্রটি জমা দেওয়া হয়।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও নিহত পলাশ আহমেদ ছাড়া আর কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই এ মামলা নিষ্পত্তির জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দেওয়া হয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়–য়া।
গত বছরের ২৪ ফেব্র“য়ারি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী মাঝআকাশে ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা টানটান উত্তেজনার পর চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণের পর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন ‘পিস্তলধারী’ এক যুবক।
পরে জানা যায়, ওই যুবকের নাম পলাশ আহমেদ, তিনি চিত্রনায়িকা শিমলার সাবেক স্বামী। এই মামলার তদন্তে শিমলাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বলেন, পাইলট, কেবিন ক্রু, বিমানযাত্রী, আসামি পলাশের স্বজন, বন্ধু, অভিযান পরিচালনাকারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ মোট ৭৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে ৩০৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি তিনি আদালতে জমা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনের সঙ্গে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবেশসহ পলাশের গতিবিধির সিসি ক্যামেরা ফুটেজ, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে পাইলটের কথোপকথনের অডিও এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা বুলেটের খোসাও জমা দেওয়া হয়।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিম বিমানের অভ্যন্তরে অভিযান শুরুর আগে টিমের সদস্যরা একাধিকবার বিমানের বাইরে থেকে মাইকে আসামিকে আত্মসমর্পণ করার অনুরোধ জানান।
তাতেও আসামি কোনো ধরনের সাড়া না দেওয়ায় সেনাবাহিনী কমান্ডো টিম সন্ধ্যা ৭টা ১৭ মিনিটে বিমানের ভেতরে প্রবেশ করে অভিযান শুরু করে এবং ৭টা ২৫ মিনিটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আসামিকে বিমানের বাইরে নামিয়ে আনেন এবং সে মারা যায়।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, আসামি পলাশ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা বারুদ বিস্ফোরণের ভয় দেখিয়ে বিমানের অভ্যন্তরে ত্রাস সৃষ্টি করে যাত্রী, পাইলট, কেবিন ক্রুদের আতঙ্কিত করে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করায় তার বিরুদ্ধে করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ এবং ১৯৯৭ সালের বিমান-নিরাপত্তাবিরোধী অপরাধ দমন আইনের ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
তবে পলাশ ছাড়া এই ঘটনার সাথে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। যেহেতু আসামি প্যারা কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছে, তাই মামলা নিষ্পত্তির জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।