বিক্ষোভের মধ্যেই উইসকিনসনের কেনোশা যাচ্ছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ এক ব্যক্তির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে ওঠা উইসকিনসন অঙ্গরাজ্যের কেনোশা সফরে যাচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার ট্রাম্প শহরটিতে যাবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
তিনি সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং সাম্প্রতিক বিক্ষোভ-সহিংসতায় হওয়া ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করবেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে পুলিশের গুলির পর থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত জেইকব ব্লেক এখনও চিকিৎসাধীন। পুলিশ তাকে পেছন থেকে ৭টি গুলি করেছিল। কৃষ্ণাঙ্গ এই ব্যক্তি ফের হাঁটতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পুলিশের গুলিতে ব্লেকের আহত হওয়ার ঘটনার পর কেনোশা এবং যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অসংখ্য শহরের লাখ লাখ মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। কোথাও কোথাও সহিংস বিক্ষোভও দেখা যায়।
কয়েক মাস আগে মিনিয়াপোলিসে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করেও যুক্তরাষ্ট্র বর্ণবাদ ও পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখেছিল।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জুড ডিয়ের জানান, মঙ্গলবার কেনোশায় গিয়ে ট্রাম্প সেখানকার স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং ‘সাম্প্রতিক দাঙ্গার ক্ষয়ক্ষতি জরিপ করবেন’।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিয়ের বলেন, গুলিতে আহত ব্লেকের পরিবারের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট দেখা করবেন কিনা, তা এখনও ঠিক হয়নি।
কেনোশায় পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ট্রাম্প এখন পর্যন্ত সরাসরি তেমন কিছুই বলেননি।
ব্লেককে গুলি করা পুলিশের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উত্থাপন করা উচিত কিনা, শুক্রবার এমন এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি এ বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনও নিচ্ছেন।
এ ধরনের ঘটনা দেখতে ‘পছন্দ করেন না’ বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে চাওয়া ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনী প্রচারণার বড় অংশজুড়েই আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি কেনোশা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ‘ডেমোক্র্যাট পরিচালিত শহরগুলোতে দাঙ্গা, লুটপাপ, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার’ ব্যাপক সমালোচনা করেছিলেন।
নভেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের ক্ষেত্রে ‘সুইং স্টেট’ হিসেবে পরিচিত উইসকনসিনে জয়ী হওয়ার গুরুত্ব ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলের কাছেই অপরিসীম।
বারাক ওবামা যে দুইবার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, দুইবারই তিনি এ রাজ্যটিতে জয়লাভ করেছিলেন। গতবার এখানে ট্রাম্প ২০ হাজারের সামান্য বেশি ভোটের ব্যবধানে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেছিলেন।
পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ ব্লেক গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠা কেনোশার বিভিন্ন সড়কে শনিবারও হাজারখানেক মানুষ ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ স্লোগান দিয়েছে।
এদিকে জেইকব ব্লেক সিনিয়র তার ছেলের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের বিচারের দাবি জানিয়ে করা কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণ রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
কেনোশায় এখন এক হাজারের বেশি ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েন আছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এই সৈন্যদের বেশিরভাগই এসেছে অন্য রাজ্য থেকে, বলেছে তারা।