বরগুনায় রিফাত ফরাজী ৭ দিন রিমান্ডে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বরগুনা শহরে প্রকাশ্য রাস্তায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার আসামি রিফাত ফরাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক গাজী মো. সিরাজুল ইসলাম বুধবার এ আদেশ দেন।
বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে রিফাত ফরাজী ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের প্রধান সহযোগী। তার ভাই রিশান ফরাজীকেও পুলিশ খুঁজছে।
মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন মঙ্গলবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান।
বরগুনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির জানান, বুধবার দুপুরে রিফাত ফরাজীকে আদালতে হাজির করে দশ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাওয়া হয়। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৫ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়।
হামলার ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। আর তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজীর নাম বলেন। ওই ভিডিওতে কালো শার্ট ও জিন্সের সঙ্গে চোখে কালো সানগ্লাস পরিহিত যে যুবককে রামদা হাতে রিফাত শরীফকে কোপাতে দেখা যায়, তিনিই রিফাত ফারজী বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।
রিফাত ফরাজী বরগুনা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি রোডের মো. দুলাল ফরাজীর বড় ছেলে। তার বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হামলা, ভাংচুর, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এছাড়া দলবল নিয়ে পুলিশের একজন এসআইয়ের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রিফাত। রিফাত শরীফ খুন হওয়ার পরদিন তার বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় যে মামলা করেন, সেখানে সেখানে ১ নম্বরে নয়ন ও ২ নম্বরে রিফাত ফরাজীর নাম ছিল।
পরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচজন এবং সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচজনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অলি ও তানভীর ১ জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।