April 19, 2024
আন্তর্জাতিক

বছরের শুরুতেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের বড় লাফ

নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় উত্থান হয়েছে। গেল এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় পাঁচ শতাংশ। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে পাঁচ শতাংশের ওপরে। আর হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরের শেষদিকে এসে বিশ্ববাজারে তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। যার প্রেক্ষিতে গত ৩ নভেম্বর দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ায় সরকার। ওইদিন রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ তেলের দাম সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজার মূল্য লিটার প্রতি ১২৪ দশমিক ৪১ টাকা বা ১০১ দশমিক ৫৬ রুপি ছিল। আর বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ ৫৯ দশমিক ৪১ টাকা কম।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ডিজেলে লিটার প্রতি ১৩ দশমিক শুন্য ১ টাকা কমে বিক্রি করছে। অপরদিকে ফার্নেস অয়েল বিক্রি করছে লিটার প্রতি ৬ দশমিক ২১ টাকা কমে। এতে করে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে বিপিসি। অক্টোবর মাসে বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্যে বিপিসির মোট ৭২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে গাড়ির ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের এই দাম বাড়ার সমালোচনা করা হয় বিভিন্ন পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে গাড়ি ভাড়া বাড়ানোরও সমালোচনা হয়।

এ পরিস্থিতিতে ৬ নভেম্বর এক ভার্চুয়ালি ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও দাম কমানো হবে।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। আমরা জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করেছি। ভারতসহ সারা বিশ্বে দাম বৃদ্ধি এবং পাচার ঠেকাতেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অবশ্য বাংলাদেশে দাম বাড়ার পর পরই বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার প্রবণতা দেখা দেয়। টানা ছয় সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকে তেলের দাম। এতে ৮৪ ডলার থেকে কমে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল ৬৬ ডলারে নেমে আসে। তবে এরপরও দেশের বাজারে তেলের দাম কমানো হয়নি।

এদিকে টানা ছয় সপ্তাহ পতনের পর ডিসেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে বিশ্ববাজারে আবার তেলের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। নতুন বছরের (২০২২ সালের) শুরুতেও জ্বালানি তেলের এই দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়ে ৭৮ দশমিক ৯৩ ডলারে উঠে এসেছে। এতে মাসের ব্যবধানে এখন বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলও দামও গেল সপ্তাহ বড় অঙ্কে বেড়েছে। গেল সপ্তাহে ৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৭৬ ডলার। এতে মাসের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

অপরদিকে গত এক সপ্তাহে ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে প্রতি গ্যালন হিটিং অয়েলের দাম ২ দশমিক ৪৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে মাসের ব্যবধানে হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *