বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীকে শোকজ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
কৃষক থেকে ন্যায্যমূল্যে সরাসরি ধান কেনার দাবিতে মানববন্ধন করায় গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীকে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। গত ব্র“হস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত নোটিসে এই শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এরা হলেন সমাজবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের দিগন্ত লস্কর, শেখ মেহেদী হাসান, স্নতকোত্তরের নিউটন মজুমদার, ব্যবস্থাপনা তৃতীয় বর্ষের ইসমাইল হোসেন রিয়াদ, সিকদার মাহবুব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৃতীয় বর্ষের নাজমুল হুদা, রথিন্দ্রনাথ বাপ্পি, শিবলী সাদিক, চতুর্থ বর্ষের সিরাজুল ইসলাম, লোক প্রশাসন তৃতীয় বর্ষের মিথুন হোসাইন, দ্বিতীয় বর্ষের সৌরভ সমাদ্দার, পরিসংখ্যান দ্বিতীয় বর্ষের রিসালাত আহমেদ অর্ণব, আইন তৃতীয় বর্ষের এস এম আব্দুলাহ কাফি এবং ইংরেজি স্নাতকোত্তরের বুলবুল আহমেদ।
নোটিসে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার অভিপ্রায়ে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সরকার ও প্রশাসন বিরোধী প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন বহন ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা এবং অত্যুৎসাহী হয়ে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন করার আগেই আপনাদের আন্দোলন করার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী একটি গর্হিত কাজ। এ ঘটনায় আপনাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সাত কর্মদিবসের মধ্যে তা জানানোর জন্য নোটিসে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে গত ১৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কৃষকের সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন। এ মানববন্ধনে শুধু ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবি করা হয়। তার ১৫ দিন পর গত ৩০ মে সরকার ও প্রশাসন বিরোধী প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন বহন ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার দাবি করে ১৪ শিক্ষার্থীকে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে নোটিসপ্রাপ্তরা যেমন আতংকের মধ্যে রয়েছেন, তেমনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকার বিরোধী আন্দোলন করায় তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তারা আন্দোলনের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে প্রশাসন ও সরকার বিরোধী আন্দোলন করবে, উস্কানিমূলক বক্তব্য দেবে এটি আমরা প্রত্যাশা করি না। এ কারণেই ১৪ জনকে শোকজ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ধানের বিক্রয়মূল্য উৎপাদন খরচের কম হওয়ায় সারাদেশে মানববন্ধনসহ নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ, যাদের মেেধ্য ছাত্ররাও রয়েছেন। এবার সরকার সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে ধান প্রতি কেজি ২৬ টাকা এবং চাল প্রতি কেজি ৩৬ টাকা। কিন্তু ফরিয়াদের কাছে কৃষকদের ধান বিক্রি করতে হচ্ছে সাড়ে তিনশ/চারশ টাকার মেেধ্য।