April 19, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

ফেসবুকের কল্যাণে ১ যুগ পর হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পেলো ছেলে

দ. প্রতিবেদক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক)’র কল্যাণে এক যুগ আগে হারিয়ে যাওয়া মাকে খুঁজে পেলেন ছেলে মাহাবুর রহমান মামুন। তবে ছোট ভাইয়ের কোন সন্ধান পাননি মামুন। শনিবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজার হতে মাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান ছেলে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মানুন জানান, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কাছিহারা গ্রামের রফিকুল ইসলাম সরদারের ছেলে তিনি। তার তিন জন বোন আছে। তাদের মা নূর নাহার বেগম (৪৫) প্রায় ১৫ বছর আগে হঠাৎ করে একজন মানুষিক প্রতিবন্ধী রোগী বনে যান। ২০০৮ সালে যখন মামুনের বয়স ১১/১২ বছর তখন কোন এক রাতে তার মা নুরনাহার বেগম সকলের চোখের আড়ালে রাতের আঁধারে কোলের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। তার পর থেকে মাকে খোঁজা-খুঁজি করতে এলাকায় মাইকিং, স্থানীয় পত্র পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন তিনি। সারাদেশ খ্ুঁজেও মা ও তার ছোট ভাইয়ের কোন হদিস পাচ্ছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার মামুন এলাকার পার্শ্ববর্তি কালিগঞ্জ উপজেলার জনৈক শুশান্ত বিশ্বাসের ফেসবুক আইডিতে হারিয়ে যাওয়া তার মায়ের ছবিসহ একটি পোষ্ট দেখে তার সন্ধান পান। সেই সূত্র ধরে শনিবার ডুমুরিয়ার চুকনগর বাজারে এসে জনৈক ডাক্তার উজ্জ্বল রায়ের সহায়তায় মা’কে খ্ুঁজে পান মামুন। মা’কে পেলেও তার ছোট ভাইয়ের কোন সন্ধান পাননি। তার ধারণা ছোট ভাইকে হয়তো মানসিক প্রতিবন্ধী মা’য়ের কাছ থেকে কেউ হয়তো নিয়ে থাকতে পারে। দীর্ঘ এক যুগ পরে মা’কে খুঁজে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে মা’কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মামুন। তার মা’ও ছেলেকে দেখে চিনতে পারে বলে জানান তিনি। মা’কে খুঁজে পেয়ে তাদের পরিবারে চলছে যেন আনন্দের বন্যা। খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে তার খুঁজে পাওয়া হারানো মাকে দেখতে লোকজন ভীড় করছে।
এ বিষয়ে কথা হয় নুরনাহার বেগমকে খুঁজে পেতে সহায়তাকারী চুকনগর মেডিক্যাল সেন্টারে কর্মরত ডা: উজ্জ্বল রায়ের সাথে। তিনি জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত পরিচয় এই মহিলাকে চুকনগর বাজারে ঘোরা ফেরা করতে দেখে এবং কথা বার্তার ধরণ শুনে লোকজন ভীড় করে। তিনিও উৎসুক হিসেবে মহিলাকে দেখতে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে মহিলার কাছে তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ, শ্যামনগরের কায়েকটি গ্রামের নাম বলেন। তখন তিনি মহিলার একটা ছবি তুলে কালিগঞ্জ উপজেলায় আমার এক আত্মীয় শুশান্ত বিশ্বাসের ফেসবুক আইডিতে মহিলার ছবিটি সেন্ড করে পোষ্ট দিতে বলি এবং মহিলাকে খুঁজে পেতে তার মোবাইল ফোন নাম্বর সংযুক্ত করে দেয়। ফেসবুকে ছবি দেখে নুর নাহার বেগমের ছেলে মামুন এবং অন্যান আত্মীয় স্বজন চিনতে পেরে শনিবার তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করে চুকনগর আসলে তিনি তার মায়ের সন্ধান দেন। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মামুনের হাতে তার মাকে তুলে দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, নুরনাহার বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও তার কথা বার্তায় মনে হয়েছে তিনি লেখা পড়া জানা একজন মহিলা। ইংরেজিতে নিজের নাম লেখা এবং পবিত্র কোরআন শরীফের সুরা মুখস্ত পড়তে পারেন শুনে বোঝা যায় তিনি একজন শিক্ষিতা নারী।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *