April 18, 2024
খেলাধুলা

ফাঁকা হচ্ছে কাতার

কাতার বিশ্বকাপের বর্ণাঢ্য আয়োজন শেষ হয়েছে রোববার (১৮ ডিসেম্বর)। ১২ বছর লেগেছে কাতারের এবারের বিশ্বকাপ-২২ আয়োজনে। অবশেষে সম্পন্ন হলো গত ২৮ দিন ধরে চলা সেই আয়োজন । ফুটবল বিশ্বকাপকে ঘিরে খেলোয়াড়, আয়োজক, সাংবাদিক আর সমর্থকসহ বহু মানুষের সমাগম ঘটে কাতারে। এখন একে একে সবাই ঘরে ফিরছে আর ফাঁকা হচ্ছে রাজধানী দোহা।

অন্যদিনের মতোই এখন কাতারের সকাল। দেশটির বাসিন্দারা টের পাচ্ছেন বিশ্বকাপের আয়োজন শেষ হয়েছে।

রাজধানী দোহার জনপ্রিয় সোক ওয়াকিফের গলিগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ব্রাজিলিয়ান, আর্জেন্টিনীয়, মরক্কো এবং অন্যান্য কয়েকডজন অংশগ্রহণকারী দেশের ভক্তদের আনাগোনায় পরিপূর্ণ ছিল এই জনপ্রিয় বাজার।

দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে নির্মাণ করা হয় সোক ওয়াকিফ বাজার। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে বাজারটিতে বসানো হয় অসংখ্য শিল্পকর্ম, এটিএম ও টেলিফোন বুথ। প্রায় সব দোকানেই বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জনকারী ৩২টি দেশের পতাকা টাঙানো হয়। ওইসব দেশের পতাকা, জার্সি, শার্ট, স্কার্ফ, শাল, চাবির রিং, পতাকা সংবলিত সানগ্লাস, ব্রেসলেট ও ক্যাপসহ সবকিছুতেই লেগেছিল বিশ্বকাপের ছোঁয়া। সেই বাজারে এখন সুনসান নীরবতা।

আহমেদ সালাম নামে পোশাকের দোকান মালিক বলছিলেন, ‘সকালে আমি এসে দেখি সব ফাঁকা, খুব কষ্ট পাই। খুবই প্রাণচাঞ্চল্য ছিল এই এলাকাটি। আমাদের এক মুহূর্ত ফ্রি থাকার সময় ছিল না। কিন্তু পরিবেশটা ছিল অবিশ্বাস্য রকম সুন্দর।’

সালাম, ভারত থেকে গেছেন। তিনি প্রত্যাশা রাখেন, ফিফা বিশ্বকাপের মতো আরও কোনো বড় টুর্নামেন্টের আয়োজন যেন হয় এই দেশটিতে। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের বাইরে প্রথম আমি কাতারে এসেছি। এখানে বিশ্বের বহু মানুষের সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছে।’

কাতার টুর্নামেন্ট চলাকালীন ১২ লাখ দর্শকের প্রত্যাশা ছিল দেশটির। যদিও সঠিক পরিসংখ্যান এখনও ঘোষণা করা হয়নি, তবে মাত্র ২৭ লাখ জনসংখ্যার একটি দেশের জন্য এই সংখ্যা আরও বেশি ছিল।

দোহাজুড়ে, কর্মীদের বিশ্বকাপের ব্র্যান্ডিংয়ের উপকরণ ও পতাকা নামিয়ে রাখতে দেখা গেছে এবং মেট্রো স্টেশনগুলোর চারপাশ পরিষ্কার করা হয়েছে। স্টেশনগুলোতে খুব একটা ভিড় নেই। কারও তাড়াহুড়োর কোনো তাগিদ নেই।

তবে কাতারের অনেক বাসিন্দা এখনও বিশ্বকাপের ঘোরের মধ্যে রয়েছেন। অনেকেই আর্জেন্টিনা দলের সাদা, নীল জার্সি, স্কার্ফ এবং টুপি পরে পরিবারের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

লে আলবিসেলেস্তেরা রোববার নাটকীয়ভাবে ফ্রান্সকে হারিয়ে তাদের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো টুর্নামেন্ট জিতেছে। তাই ভক্তরা একটু বেশি আনন্দিত।

কাতারের বাসিন্দা ও ব্রিটিশ নাগরিক মিমি বলেন, তিনি এখনও গত চার সপ্তাহের ঘটনাগুলো স্মরণ করে উদ্বেলিত। কাতারের মানুষ এটার অংশ হতে পেরেছে। ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী আরও বলেন, এটি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।

বিশ্বকাপের আগে, দোহার একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক, ৪৫ বছর বয়সী গ্রীক বাসিন্দা জোই জাইগেলোপোলু বলেন, অনেকেই ভাবছিলেন কাতার কীভাবে এতো বড় ক্রীড়া ইভেন্টের আয়োজন করবে।

কিন্তু খেলা শুরুর সপ্তাহ যেতে না যেতেই, জাইগেলোপোলু তার রেস্তোরাঁয় যেসব পর্যটকদের সাক্ষাৎ পান তারা সত্যিই অবাক হয়েছেন। তারা আরও বলেন, এটি সেরা বিশ্বকাপ।

এদিকে, বিশ্বকাপে জেতার পর দেশে ফিরেছে মেসি ও তার দল। তাদেরকে কাছে পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত আর্জেন্টাইনরা। দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসিদের এই উদযাপন আরও কতদিন চলে সেদিকেই এখন ফুটবলপ্রেমীদের চোখ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *