প্রধানমন্ত্রীকে পুষ্প কমল দাহালের নেতা সম্বোধন: আমাদের আশা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এফএও-এর সদর দফতরে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থার শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের দ্বিপাক্ষিক একটি বৈঠকের সুযোগ হয়। বৈঠকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনা পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন। আজকের বিভিন্ন দৈনিকে এ বিষয়ে খবর বেরিয়েছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ সাক্ষাৎ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতিমধ্যে নেপালের জন্য চালনা ও চট্টগ্রাম বন্দর খুলে দিয়েছে। নেপাল নবনির্মিত পায়রা বন্দরও ব্যবহার করতে পারে’।
এফএও এর সদর দফতরে সদ্য খোলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে মোমেন সোমবার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। খবরে প্রকাশ, দু’দেশের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি সফলভাবে দেশ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসাও করেন এবং প্রসঙ্গক্রমে দাহাল এক সময় শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি আমাদের অঞ্চলের নেতা’। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘নেতা’ সম্বোধন করায় আমরা নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
এ কথা সত্য যে, কুটনৈতিক মহলে, ভূ-রাজনীতির আলোচনায় বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উঠলে, বলা হয়, দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, আপনি আমাদের নেতা। তার কারণ, ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান আছে, পাশাপাশি শেখ হাসিনারও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলাদেশের মানচিত্রের দিকে তাকালে যে কেউ বুঝে যাবেন, কেন আমাদেরকে নেতা বলা হচ্ছে। কিন্তু শুধু মানচিত্রের অবস্থান একটি দেশকে শক্তিশালী করে না। শক্তিশালী অবস্থান তৈরি ও তাকে ধরে রাখতে হলে অব্যাহতভাবে রাজনীতি ও অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করে যেতে হয়। নিজেদেরকে উত্তরউত্তর আরও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে হয়। এ প্রক্রিয়ায়, আত্মতৃপ্ত হয়ে বসে থাকার কোনো সুযোগই নেই। রাজনীতি ও অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার চ্যালেঞ্জগুলিকে চিহ্নিত করা ও তাকে মিনিমাইজ করার লক্ষ্যে ক্রমাগত পরিশ্রম করে যাওয়া। সেটাই রাষ্ট্রপরিচালনায় আসীন নেতৃত্বের সামনে বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। আমরা আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার মেধা, যোগ্যতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে স্বদেশের রাজনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহও সার্থকভাবে মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। সময়ের কঠিন পরীক্ষায় তিনি সাবলিলভাবে সক্ষম হবেন, উত্তীর্ণ হবেন। তখন শুধু একজন পুস্পকমল দাহাল নন, এ অঞ্চলের সব জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদই দ্ব্যার্থহীন কন্ঠে শেখ হাসিনাকে বলবেন, ‘আপনিইতো প্রকৃত বাংলাদেশ, আপনিই তো আমাদের সার্থক নেতা’।