পাহাড়ের ছয় খুনের আসামি আনন্দ চাকমা ঢাকায় গ্রেপ্তার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক-এর প্রধান তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাসহ ছয় খুনের আসামি ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-২ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আলী বলেন, তাদের একটি দল রোববার শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫৯ বছর বয়সী আনন্দ প্রকাশকে গ্রেপ্তার করে। আগারগাঁও স্টাফ কলোনিতে মেয়ের বাসায় আত্মগোপন করে ছিলেন আনন্দ প্রকাশ চাকমা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাত থেকে র্যাব ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে ছিল। পরে দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন আনন্দ প্রকাশ চাকমা। তাদের নির্দেশেই গতবছর শক্তিমান ও তপনজ্যোতিসহ ছয়জনকে হত্যা করা হয় বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও উনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সংস্কারবাদী অংশের অভিযোগ।
১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে সন্তু লারমার পার্বত্য শান্তি চুক্তির বিরোধিতা করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ছেড়ে ইউপিডিএফ গঠন করেছিলেন প্রসীত খিসা। প্রায় এক যুগ আগে জনসংহতি সমিতি আরেক দফা ভেঙে সুধা সিন্দু খীসার নেতৃত্বে গঠিত হয় জেএসএস (এমএন লারমা)। নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা ছিলেন জননসংহতি সমিতির ‘এমএন লারমা’ অংশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি।
আর তপন জ্যোতি চাকমা বর্মার নেতৃত্বে ইউপিডিএফের সংস্কারবাদী একটি অংশ দুই বছর আগে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে নতুন দল গঠন করেন। নানিয়ারচর এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধেরে রাখতে জেএসএস এর এমএন লারমা অংশের সঙ্গে তাদের এক ধরনের মিত্রতা তৈরি হয়।
পাহাড়ি সংগঠনগুলোর এই বিভক্তির পথ ধরে গতবছর পার্বত্য জেলাগুলোতে নতুন করে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। গত বছর ৩ মে উপজেলা পরিষদে যাওয়ার সময় শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন তার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে হামলায় নিহত হন তপনজ্যোতি চাকমা বর্মাসহ পাঁচজন।
র্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, ওই ছয় খুনের ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, তাতে আনন্দ প্রকাশ চাকমাও আসামি। তবে সন্তু লারমার জেএসএস এবং প্রসীত খিসার ইউপিডিএফ ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে।