May 3, 2024
আঞ্চলিক

পাইকগাছায় বোরকা পার্টি ও ছেলেধরা আতংক ছেলেধরা সন্দেহে মহিলাকে গণপিটুনী

 

 

পাইকগাছা প্রতিনিধি

গত কয়েক দিন ধরে পাইকগাছার সর্বত্রই বোরকা পার্টি ও ছেলে ধরা আতংক বিরাজ করছে। সব চেয়ে বেশি আতংকে রয়েছে পরিবারের নারী ও শিশুরা। আতংকিত এলাকাবাসী কোথাও কোথাও রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার আগড়ঘাটা বাজার সংলগ্ন সিলেমানপুর এলাকায় এলাকাবাসী ছেলে ধরা সন্দেহে অজ্ঞাত এক মহিলাকে গণপিটুনী দিয়ে গুরুতর আহত করেছে। থানাপুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছে। এ ধরণের আতংক গুজব ছাড়া আর কিছুই নয় বলে পুলিশ ধারণা করছে। এ ধরণের ঘটনায় আইন হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছে থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ।

প্রাপ্ত সূত্র মতে, গত কয়েকদিন ধরে জেলার অন্যান্য স্থানের ন্যায় পাইকগাছার সর্বত্রই বোরকা পার্টি ও ছেলেধরা আতংক বিরাজ করছে। এ ধরণের আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে অনেক এলাকার মানুষ। তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত এ ধরণের ঘটনার কোথাও সত্যতা পায়নি। অনেকেই বলছেন, এটি নিছক গুজব ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার অনেকেই বলছেন, কিছু লোক বোরকা পরে রাতে এলাকায় প্রবেশ করে নারী ও শিশুদের উপর নির্যাতন করছে। এমনকি তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বোরকা পার্টি তৎপর রয়েছে। এমনই আতংকের মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার আগড়ঘাটা বাজার সংলগ্ন সিলেমানপুর এলাকায় এলাকাবাসী মধ্য বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক মহিলাকে গণপিটুনী দিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে, থানাপুলিশের এস,আই নাজমুল হক ও এস,আই মিন্টু মিয়া ঘটনাস্থল থেকে উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে অজ্ঞাত ঐ মহিলাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতালে উপস্থিত অনেকেই বলেন, এলাকাবাসী যে মহিলাকে গণপিটুনী দিয়েছে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। অনেকেই বলছেন, তাকে দেখতে অনেকটাই রোহিঙ্গা নারীদের মত মনে হচ্ছে।

থানার এস,আই নাজমুল হক জানান, এ ধরণের মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার দ্বারা কোন অপরাধমূলক কাজ করা সম্ভব নয়। আমি তখন নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এলাকাবাসী অজ্ঞাত ঐ মহিলাকে গণপিটুনী দিচ্ছে। আমরা যদি সময়মত না পৌছাতাম তাহলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হত। যুবলীগনেতা মোঃ আব্দুল গফফার মোড়ল জানান, এ ধরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়েছি। আমার মনে হয় জনগণকে সচেতন করার জন্য থানা পুলিশ ও প্রশাসনকে এলাকায় মাইকিং করা সহ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, বোরকা পার্টি বলে আমরা এখনও এর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। এটি নিছক একটি গুজব। আজ এলাকাবাসী আইন হাতে তুলে নিয়ে যে কাজটি করেছে অজ্ঞাত এ মহিলাটি যদি মারা যায় এর দ্বায়ভার কে নিবে? আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে কপিলমুনি এলাকায় মাইকিং করেছি। আগামীকাল উপজেলার সবখানে মাইকিং করা হবে। আমাদের অনুরোধ কোথাও কোন অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখলে সাথে সাথে থানাপুলিশকে খবর দিন। দয়া করে কেউ আইন হাতে তুলে নিবেন না। এটি আমাদের অনুরোধ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *