April 28, 2024
লাইফস্টাইল

পরিবার দু’একজনের ডায়াবেটিস থাকেই, যা জানতে হবে

বিশেষজ্ঞরা বলেন-
খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭ মিলিমোললিটার বা তার বেশি হলে এবং খাবার ২ ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলি মোললিটার বা তার বেশি হলে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

টাইপ
ডায়াবেটিস মূলত ২ ধরনের। টাইপ-১ বা ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন উৎপাদন কম হলে বা না হলে দেখা দেয়। টাইপ-২ বা নন ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস মেলাইটাস যা ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করলে বা উৎপাদন অনুপাতে রোগীর শরীরের ওজন বেশি হলে দেখা দেয়।

জেনে নিন ডায়াবেটিসের লক্ষণ

অতিরিক্ত ক্ষুধা  
খাওয়ার পরই দেখা যায়, আবার ক্ষুধা অনুভব করছেন। আসলে যখন রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তখন শরীরকে সচল রাখার জন্য অতিরিক্তি খাদ্যের প্রয়োজন হয়।

ক্লান্ত লাগে 
ব্লাড সুগার বেড়ে গেলে অল্প পরিশ্রমেই শরীর ক্লান্ত হয় যায়। ঘুম পায়, কাজে মনোযোগ দিতেও কষ্ট হয়।

গলা শুকিয়ে যায়
একটু পরপরই পানির তেষ্টা পায়, আর বারবার মূত্রত্যাগ করার প্রয়োজন বোধ হয়। এটাই ডায়াবেটিসের মূল লক্ষণ হিসেবে ধরে নেন অনেকে।

ওজন কমে 
অনেকেই খুশি হন এই ভেবে যে, অনেক চেষ্টা করেও যখন ওজন কমানো যায়নি। আর এখন এমনিতেই ওজন কমে স্লিম হয়ে যাচ্ছে। সত্যিটা হচ্ছে, ডায়াবেটিস যখন শরীরে বাসাবাঁধে, তখন ওজন কমে যায়।

দৃষ্টি
দীর্ঘদিন হাই ব্লাড সুগার থাকলে চোখের দৃষ্টি অস্পষ্ট হয়ে আসে।

ইনফেকশন
ব্লাড সুগার বৃদ্ধি পেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে শরীরে ফাংগাস ইনফেকশন বেশি হয়, আর যেকোনো ধরনের ইনফেকশন সারতে অনেক বেশি সময় নেয়।

ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার পর যা করতে হবে

হাঁটা
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য হাঁটা সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। সুবিধামতো একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্তত ৪৫ মিনিট একটু বেশি গতিতে হাঁটতে হবে।

যে খাবারগুলো রাখতে হবে নিয়মিত ডায়েটে
দই
এতে ক্যালোরি কম থাকে। ফলে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে দেয় না।

শিম
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শুকনো শিম খাওয়া উচিৎ। অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত ক্যানজাত শিম নয়। শিমে গ্লুকোজ উপাদান কম থাকে। ফলে এটি যেকোনো শ্বেতসার জাতীয় খাবারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অনেক বেশি। শিমে উচ্চহারে আঁশ থাকে। ফলে তা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে রাখে।

বেরি
বেরিজাতীয় ফলগুলোতেও গ্লুকোজ উপাদান কম থাকে। বেরিতে আছে ফ্রু্ক্টোজ যা হজমের জন্য ইনসুলিন দরকার হয় না।

লাল চাললাল আটা
সাদা আটা, সাদা চালের ভাত-রুটি রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেতে তাই লাল আটাও লাল চালের ভাত-রুটি খেতে হবে।

আপেল
যারা প্রতিদিন আপেল খান তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে।

খেজুর
অনেক মিষ্টি কিন্তু খেজুর খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়বে না।

বাদাম
প্রতিদিন যেকোনো ধরনের নিজের হাতের একমুঠ পরিমাণ বাদাম খাওয়ার অভ্যেস করুন।

সবজি
কম চর্বি এবং উচ্চমাত্রার ফাইবার থাকায় বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন-মটরশুঁটি, টমেটো নিয়মিত খেতে হবে।

সবুজ শাক
প্রতিদিনের খাবারে যেকোনো একটি শাক রাখুন।

ওটস
ওটসের তৈরি যেকোনো ধরনের খাবারই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো। কাজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনের ডায়েটে এ খাবারটিও রাখুন।

মাংস
ডায়াবেটিস রেড মিটকে(লাল মাংস) রেড কার্ড দেখান। মুরগির মাংস একপিস, পরিমিত মাছ আর দিনে একটি ডিম খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে, সুষম খাদ্য খেতে হবে, বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে বছরে ১ থেকে ২ বার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে।

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও নিয়মিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়েও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা সম্ভব।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *