নেত্রকোণায় শিশুর মাথা উদ্ধারের ঘটনায় দুই মামলা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নেত্রকোণা শহরে এক শিশুর ছিন্ন মাথাসহ ধরা পড়া এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জেলার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শিশু সজীবের বাবা বাদী হয়ে রবিনসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেছেন।
আর রবিন হত্যায় নেত্রকোণা মডেল থানার এসআই রফিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের নিউটাউনের অনন্তপুকুর পাড়ে এই পিটুনির ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুটি নেত্রকোণা সদরের আমতলা গ্রামের রিকশাচালক রইছ উদ্দিনের ছেলে সজীব (৮)। রইছ উদ্দিন শহরের কাটলি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। পিটুনিতে নিহত রবিন (২২) জেলা শহরের কাটলি এলাকার এখলাস উদ্দিনের ছেলে। তিনিও রিকশাচালক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশ জানায়, রবিন হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে শহরের বারহাট্টা রোডের হরিজন পলীতে মদ খেতে যান। সেখানে এক ঘরে মদ না পেয়ে অন্যঘরে যাওয়ার সময় ব্যাগ থেকে রক্ত পড়তে দেখেন হরিজন পলীর লোকজন। তখন তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি সঠিক জবাব দিতে না পারায় ব্যাগ খুলে শিশুর মাথা দেখতে পান স্থানীয়রা।
এ সময় রবিন মাথাটিসহ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তার পিছু ধাওয়া করে এবং নিউটাউন এলাকায় অনন্ত পুকুর পাড়ে তাকে ধরে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, রবিন ও শিশুটির বাবা একই এলাকার বাসিন্দা এবং পরস্পরের পূর্বপরিচিত। কাটলি এলাকার একটি নির্মাণাধীন বাড়ির টয়লেটে সজিবকে গলাকেটে হত্যা করে রবিন। সজিবকে নির্যাতনের পর রবিন হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্ত করে জানা গেছে।
রবিনকে দচিহ্নিত মাদকবিক্রেতা’ দাবি করে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পদ্মাসেতুতে মাথা লাগবে এমন গুজবের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। রবিনের জব্দকৃত মোবাইল ফোনটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি আক্কাস উদ্দিন ভুইয়া সাংবাদিকদের বলেন, মাথা ছিন্ন করে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যে তৈরি হয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এর সঙ্গে পদ্মাসেতুতে মাথা দরকার এমন গুজবের কোন সম্পর্ক নেই।