April 25, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

নেতাহীন জঙ্গিরা ছোট ছোট গ্র“পে বিভক্ত : মনিরুল

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

গুলশান হামলার তিন বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর এখনও বাংলাদেশে জঙ্গিরা ফনা মেলতে চাইলেও তাদের সেই সামর্থ্য আর নেই বলে দাবি করেছেন জঙ্গি দমনে গঠিত পুলিশের বিশেষ ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

এই জঙ্গিরা এখন নেতৃত্বহীন অবস্থায় ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, বর্তমানে জঙ্গিদের ইন্টেনশন থাকলেও ক্যাপাসিটি ও ক্যাপাবিলিটি নেই। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার তিন বছর পূর্তির আগের দিন রবিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সামনে আসেন তিনি; কথা বলেন ওই হামলার তদন্ত, অভিযোগপত্র দাখিল এবং দেশে জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে।

কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হামলার পর ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে বাংলাদেশের জঙ্গিরা তাদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিল। দুই পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হয়েছিলেন ওই হামলায়। তার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি জঙ্গিরা জানান দিয়েছিল, ভয়াবহ হামলা চালানোর শক্তিও তারা অর্জন করেছে।

১৭ বিদেশির মৃত্যুতে ওই হামলার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামেও উঠে এসেছিল বাংলাদেশ; যা সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কপালেও ভাঁজ ফেলেছিল। গুলশান হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো মিলে সাঁড়াশি অভিযানে নামে, তাতে মিলতে থাকে ‘নব্য জেএমবি’র একটির পর একটি আস্তানার খোঁজ। এসব অভিযানে মারা পড়েন জঙ্গি নেতাদের অনেকেই, উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে যে মামলাটি হয়েছে, তার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রও দিয়েছে পুলিশ। হামলায় জড়িত মোট ২১ জনকে চিহ্নিত করলেও অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় আটজনকে।

মনিরুল বলেন, জীবিত মোট আট জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। বাকি ১৩ জন বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছিল। ৮ জনের মধ্যে দুজন পলাতক ছিল। পরে তারা র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়। এই আটজনের বাইরে আর কারও নাম এলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।

পরে দুজনকে আমরা জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন কোনো তথ্য বা অন্য কাউকে অভিযুক্ত করার মতো বা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাইনি, বলেন মনিরুল।

মামলাটির বিচারের গতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ৮ জনের বিচারকার্য বিজ্ঞ আদালতে চলমান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে এ মামলার শুনানি গৃহীত হচ্ছে। গুলশান হামলার পরপরই শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতে হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, কিন্তু তা ঠেকিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মনিরুল বলেন, আমরা দেখেছি যে, তাদের (জঙ্গি)  পরিকল্পনা ছিল হলি আর্টিজান স্টাইলে আরও কিছু নৃশংস ঘটনা, সহিংস ঘটনা ঘটনোর। কিন্তু ‘প্রো-অ্যাক্টিভ ইনভেস্টিগেশন’ এর মাধ্যমে তাদের সেই পরিকল্পনাগুলো অভিযান চালিয়ে রুখে দেওয়া হয়।

ঝুঁকি নিয়ে নানা জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই পর্যায় তাদেরকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি  এবং হলি আর্টিজান এর পরবর্তী শোলাকিয়ার ঘটনা বাদ দিলে এবং সিলেটের একটি ঘটনা আছে, যেটা সেকেন্ডারি আক্রমণ, সেটি ছাড়া আর বড় কোনো ঘটনা বাংলাদেশ সংগঠিত হয়নি।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *