নুসরাত হত্যায় আ’লীগ সভাপতি রুহুল আমিন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
* খাল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকা উদ্ধার
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের হেফাজতের (রিমান্ড) আদেশ দিয়েছে আদালত। আদালত পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমেদ এই আদেশ দেন।
বিকালে পুলিশ রুহুল আমিনকে আদালতে হাজির করে নুসরাত হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে বলে তিনি জানান। শুক্রবার বিকালে নিজ বাড়ি থেকে রুহুল আমিনকে আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত রুহুল আমিনসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যায় যারা বোরকা পরে অংশ নিয়েছিল তাদের একজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে খাল থেকে একটি বোরকা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পিবিআই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনীর পিবিআই পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, নুসরাতের সহপাঠী রিমান্ডে থাকা জোবায়েরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সোনাগাজী সরকারি কলেজের পেছনের খাল থেকে তারা এই বোরকাটি উদ্ধার করেন। জোবায়ের এই মামলার এজহারভুক্ত আট আসামির একজন। তাকে গত ৯ এপ্রিল সোনাগাজী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জোবায়ের এখন রিমান্ডে রয়েছেন।
পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, নুসরাতের সহপাঠী জোবায়ের এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোনাগাজী সরকারি কলেজের পেছনে একটি খালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে থেকে হত্যার সময় ব্যবহৃত তিনটি বোরকার একটি উদ্ধার করে পিবিআই।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে অপর আসামি কামরুন নাহার মনির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই জেনেছে সোনাগাজী পৌরশহরের মানিক মিয়া প্লাজার একটি দোকান থেকে মনি বোরকা কেনেন। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া পুরুষদের গায়ে যে তিনটি বোরকা ছিল তার একটি উদ্ধার করল পিবিআই।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত ছিলেন ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী। গত ৬ এপ্রিল আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় কয়েকজন। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যান।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতের পরিবারের দায়ের করা মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষর লোকজন তার গায় আগুন দেয় বলে পরিবারের অভিযোগ। এ ঘটনায় মামলায় অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যসহ আটজনের নাম উলেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।