April 19, 2024
জাতীয়

নিরীক্ষা দাবি: ১৩৮ কোটি টাকার প্রথম কিস্তি দিল রবি

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসির ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার নিরীক্ষা দাবির মধ্যে থেকে হাই কোর্টের নির্দেশে ১৩৮ কোটি টাকার প্রথম কিস্তি পরিশোধ করেছে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি।

বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খাঁন জানান, পাঁচ কিস্তির মধ্যে রবি প্রথম কিস্তির ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা মঙ্গলবার বিটিআরসিতে জমা দিয়েছে। কিস্তি পরিশোধ করলেও রবি এক বিবৃতিতে বিটিআরসির নিরীক্ষা প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক’ বলেছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমা দেওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার আশাও করছে প্রতিষ্ঠানটি।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বিবৃতিতে বলেন, মূলত সেবার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই আদালত নির্দেশিত প্রথম কিস্তির অর্থ জমা দেওয়া হয়েছে। তবে অর্থ জমা দিলেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অযৌক্তিক, সে বিষয়ে আমাদের অবস্থান এখনো দৃঢ় এবং স্পষ্ট। তাই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কিস্তির যে অর্থ আজ আমরা জমা দিয়েছি তা যথাসময়ে ফেরত পাবো বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

এছাড়া, আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা স্বাধীনভাবে অন্যান্য বিকল্প আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন ন্যায়বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে। তবে এটি অনস্বীকার্য, যে প্রক্রিয়ায় পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত এগিয়েছে তা আমাদের বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধরনের ফাটল তৈরি করেছে, বলা হয় বিবৃতিতে।

গত ৫ জানুয়ারি বিটিআরসির ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার নিরীক্ষা দাবির মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা কিস্তিতে পাঁচ মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

আদেশের পর বিটিআরসির আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এর আগে গ্রামীণফোনের ১২ হাজার কোটি টাকার নিরীক্ষা দাবির মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট আনুপাতিক হিসাব করে রবিকে ১৩৮ কোটি টাকা দিতে বলেছে।

গত বছরের ৩১ জুলাই গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে চিঠি দেয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস পাঠানো হয় দুই অপারেটরকে। কিন্তু বিটিআরসির দাবি করা টাকার ওই অঙ্ক নিয়ে বরাবরই আপত্তি জানিয়েছে দুই অপারেটর।

সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তিতে বিটিআরসি রাজি না হওয়ায় দুই কোম্পানি আদালতের দ্বারস্থ হয়। বিটিআরসির দেওয়া ওই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে নি¤œ আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে রবি। মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়।

কিন্তু নি¤œ আদালত রবির অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে হাই কোর্টে আপিল করে রবি। সেই আবেদনের শুনানি করে হাই কোর্ট গত ২৫ নভেম্বর রুল জারি করে। রবির কাছ থেকে পাওনা আদায়ে বিটিআরসিকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

সেই রুলের ওপর আদেশ হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। কিন্তু তা পিছিয়ে আদালতে আসে ৫ জানুয়ারি। ওইদিন রুলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে হাই কোর্ট গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের নির্দেশনার আদলে আদেশ দেয়।

গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির নোটিসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত ২৪ নভেম্বর তা বহাল রেখেই আপিল বিভাগ অবিলম্বে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এরপর রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিস পাঠায় গ্রামীণফোনের মালিক কোম্পানি টেলিনর।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *