April 20, 2024
খেলাধুলা

নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পেছাল

আইনসম্মতভাবে বিচ্ছেদের আগেই নতুন করে বিয়ের অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন এবং বিমানবালা তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে তার সাবেক স্বামীর করা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে গেছে।

সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ২৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।

নাসির ও তাম্মির পাশাপাশি তাম্মির মা সুমি আক্তারও এ মামলার আসামি। তাদের তিনজনকেই স্থায়ী জামিন দিয়েছেন বিচারক।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর তারা ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মামলার পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত তা মঞ্জুর করেন এবং বিচারের জন্য মামলাটি অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।

সোমবার এ আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন থাকলেও নাসিরের আইনজীবী কাজী নজিবুল্যাহ হীরু তা পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। পাশাপাশি নাসিরসহ তিনজনের স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তিনি।

এ সময় মামলার বাদী ও তামিমার প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী মো. রাকিব হাসানের আইনজীবী ইশরাত জাহান জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।

শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ২৪ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন শুনানির দিন রাখেন এবং তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন।

রাকিব হাসানের দায়ের করা এই মামলায় পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গত ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

সেখানে বলা হয়, আগের স্বামী রাকিব হাসানের সঙ্গে ‘যথাযথভাবে বিচ্ছেদ’ হওয়ার আগেই তামিমা ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেন। সুতরাং তাদের এ বিয়ের ‘বৈধতা নেই’। তালাকের বিষয়ে তারা যা বলেছেন, তার ‘সত্যতা মেলেনি’। ডিভোর্সের যে কাগজপত্র দেখানো হয়েছে, সেগুলো তৈরি করা হয়েছে ‘জালিয়াতির মাধ্যমে’।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে ঢাকার হাকিম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন মো. রাকিব হাসান। তার বক্তব্য শুনে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার আর্জিতে তামিমার বয়স ২৯ এবং রাকিবের বয়স ৩২ বছর লেখা হয়েছিল। আর ক্রিকেটার নাসিরের বয়স দেখানো হয় ৩০ বছর।

রাকিব মামলায় বলেন, তামিমার সঙ্গে তার বিয়ে হয় ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। তাদের ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে।

তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু, একটি বিদেশি এয়ারলাইন্সে তিনি কাজ করেন। পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে গতবছর মার্চে সৌদি আরবে গিয়ে তিনি লকডাউনে আটকা পড়েন। তবে ফোন ও সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে রাকিবের ভাষ্য।

তিনি বলছেন, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসিরের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকেই বিষয়টি তিনি জানতে পারেন।

মামলায় রাকিব অভিযোগ করেন, তার সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছেদ না ঘটিয়েই নাসিরকে বিয়ে করেছেন তামিমা।

মামলা হওয়ার পরদিন ঢাকার বনানীতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন নাসির ও তামিমা।

সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তামিমা বলেছিন, “উনি (রাকিব) যতগুলো কথা বলেছেন, এরমধ্যে দুইটা জিনিস ছাড়া (আমাদের বিয়ে হয়েছিল ও আমাদের একটা বাচ্চা রয়েছে) বাকি সব কথা মিথ্যা। এর প্রত্যেকটি প্রমাণ আমাদের রয়েছে।”

রাকিবকে ‘তালাক দিয়েই’ নাসিরের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন দাবি করে তামিমা বলেছিলেন, “উই আর ক্রিস্টাল ক্লিয়ার। উই আর নট গিল্টি। উই আর ইনোসেন্ট। আমি কোনো ভুল করিনি। হেনস্তা করার জন্য রাকিব এসব করেছে।”

আর নাসির সেই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “বিয়ে হয়েছিল, বাচ্চা ছিল। ডিভোর্স হয়েছে। পেপার দেখে আমরা বিয়ে করেছি। আমরা যা করেছি, লিগ্যাল ওয়েতে করেছি, ইলিগ্যাল কিছু করিনি। আমরা যাই করেছি, সেটা আইনগতভাবে ও ইসলামী শরীয়ত মেনে করেছি। সবাইকে জানিয়ে বিয়ে করেছি।”

কিন্তু সাত মাস তদন্ত করে পিবিআই যে অভিযোগপত্র দেয়, সেখানে ‘যথাযথভাবে বিচ্ছেদ না করেই’ নতুন বিয়ে করার অভিযোগ আনা হয় তামিমার বিরুদ্ধে।

আর নাসিরের বিরুদ্ধে আনা হয় ‘অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ’ করে নিয়ে যাওয়া, ‘ব্যাভিচার’ এবং তামিমার আগের স্বামীর মানহানি ঘটানোর অভিযোগ।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিস পাননি। তামিমা উল্টো ‘জালিয়াতি’ করে তালাকের নোটিস তৈরি করে তা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখিয়েছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেওয়ায় তামিমা এখনও ‘আইনত রাকিবের স্ত্রী’।

আর সব ‘জেনেও’ বিয়েতে সহায়তা করায় তামিমার মাকেও অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়। তালাকের শর্ত ‘পূরণ হয়েছে’ দেখাতে সুমি আক্তার বেশ কিছু ‘জালিয়াতিও করেছেন’ বলে পিবিআইয়ের ভাষ্য।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *