নগরে নাসিম-রাসেল! জেলার নেতৃত্বে কারা?
খুলনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন আজ
দ. প্রতিবেদক
আজ ৬ নভেম্বর খুলনা জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ১৫ বছর আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আত্মপ্রকাশের পর এবারই প্রথম খুলনায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন উপলক্ষ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্পটসহ আওয়ামী লীগ অফিসের আশেপাশে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন নেতার ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ। আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ আইল্যান্ডকে। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলন ঘিরে আগ্রহের কমতি নেই নেতাকর্মীদের মধ্যে। কারা হচ্ছেন আগামী দিনের কান্ডারি তা নিয়েও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। অপেক্ষা শুধু সেই মহেন্দ্রক্ষণের। নগর কমিটির নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আভাষ পাওয়া গেলেও জেলার নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে রয়েছে ধু¤্রজাল।
দলীয় সূত্র জানায়, নগরে সম্ভাব্য নেতৃত্ব অনেকটাই ওপেন-সিক্রেট। এ কমিটিতে সভাপতি পদে আযমখান সরকারি কমার্স কলেজের সাবেক ভিপি এম এ নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক পদে নগর ছাত্রলীগ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল অনেকটাই চূড়ান্ত। এর বাইরেও সভাপতি পদে মীর বরকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক পদে আহমেদ ফিরোজ ইব্রাহীম তন্ময়ের নাম রয়েছে আলোচনায়।
নগর ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহŸায়ক ও সভাপতি প্রার্থী মীর বরকত আলী জানান, কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন হবে। কাউন্সিলে নেতৃত্ব নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে স্থানীয় নীতি-নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য-সচিব ও সভাপতি প্রার্থী এম এ নাসিম জানান, নেতৃত্ব নির্বাচনে মূল দলের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। নীতি নির্ধারকের বাইরে তার নিজস্ব কোন মতামত নেই।
এদিকে জেলা শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তত ছয় প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। আর এ কারণে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় দপ্তরে আবেদন জানিয়েছে জেলার নয়টি উপজেলা ও পৌরসভার তৃণমূল নেতারা। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদে তিনজনের নাম রয়েছে। সভাপতি পদে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক মোতালেব হোসেন, জেলা যুবলীগের সদস্য বিধান চন্দ্র রায়, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য আজিজুর রহমান রাসেল ও রেজাউল করিম রেজা প্রার্থী। এদের মধ্যে মোতালেব হোসেন দীর্ঘদিন সংগঠনের নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করছেন। আর আজিজুর রহমান ১৪ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। আবার রেজাকে নিয়েও নিজ সংগঠনে বিতর্ক রয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ গেছে কেন্দ্রেও।
জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ছাত্রনেতা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সহ-সভাপতি মো. রাসেল ভুলু। আর সভাপতি পদ না পেলে এখানেও প্রার্থী হবেন আজিজুর রহমান রাসেল। ফলে জেলা কমিটিতে হিসেব কিছুটা হলেও জটিল। প্রার্থীদের মধ্যে মিজানুর রহমান ছাত্র রাজনীতি শেষে সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন। অন্যরা নতুন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১ জুন সর্বশেষ সম্মলেনের মাধ্যমে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৭১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হন যথাক্রমে শেখ মোশারফে হোসনে ও জেড এ মাহমুদ ডন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে মীর বরকত আলীকে আহবায়ক ও এমএ নাসিমকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়।
অপরদিকে ২০০৩ সালের সালের ২০ এপ্রিল মালিক সরোয়ার উদ্দীনকে আহবায়ক ও পাঁচজনকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ৩১ সদস্যের খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক কমিটি করা হয়। ২০০৫ সালের ১২ জুন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর পুনরায় মালিক সরোয়ার উদ্দিনকে আহবায়ক এবং মোতালেব হোসেন ও খান সাইফুল ইসলামকে যুগ্ম-আহবায়ক করে জেলার ৫১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। কমিটির আহবায়ক মালিক সরোয়ার উদ্দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর মারা যান।
কর্মসূচি: আজ শনিবার সকাল ১০টায় শহীদ হাদিস পার্কে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ। প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল ও বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়।