April 27, 2024
জাতীয়

ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষেতে আগুন দিলেন কৃষক

 

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে পাকা এ ফসলের ক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পাইকড়া গ্রামের আব্দুল মালেক সিকদার নামে এক কৃষক। গতকাল রোববার  দুপুরে উপজেলার পাইকড়া ইউনিয়নের বানকিনা এলাকায় আব্দুল মালেক তার নিজের ধান ক্ষেতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

তার অভিনব প্রতিবাদ দেখে ছুটে আসা এলাকার লোকজন বলছেন, টাঙ্গাইলে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকায়। আর একজন শ্রমিকের দিনমজুরি ৮৫০ টাকা। এতে প্রতিমণ ধানে কৃষককে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাতে আব্দুল মালেকের মতো কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিমণ ধানের দাম থেকে প্রতি শ্রমিকের মজুরির দাম দ্বিগুণ। এবার ধান আবাদ করে আমরা মাঠেমারা পড়েছি। তাই মনের দুঃখে পাকা ধানে আগুন দিয়েছি। আব্দুল মালেক সিকদার। ছবি: বাংলানিউজএদিকে কালিহাতীর আউলটিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান মজনু নামের আরেক কৃষক তার ক্ষেতের পাকা ধান এলাকাবাসীকে বিনা মূল্যে দিয়ে দিয়েছেন। এলাকাবাসী ধান কেটে অর্ধেক অংশ নিজে এবং বাকি অর্ধেক অংশ ক্ষেত মালিককে দিয়ে দিচ্ছেন।

জেলার মির্জাপুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। অথচ শ্রমিকের দিনমজুরি ৯০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে।

রকিবুল ইসলাম নামের এক চাষী বলেন, বীজতলা থেকে শুরু করে প্রতি মণ ধান ঘরে তুলতে হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়। কিন্তু ধান বিক্রি করছি তার অর্ধেক দামে। এবার আমরা পথে বসে গেছি। কৃষককে ধানের ন্যায্য দাম দিয়ে বাঁচাতে হলে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন বলেও জানান কয়েকজন কৃষক।

কৃষি নিয়ে কাজ করা এনজিও কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বর্তমানে কৃষকদের অবস্থায় খুবই শোচনীয়। লাভতো দূরের কথা, ধান চাষ করে কৃষকদের উল্টো আর্থিকভাবে বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

আব্দুল মালেকের ক্ষেতে আগুন দেওয়ার বিষয়ে পাইকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দেওয়া উচিত। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএম শহীদুল ইসলাম জানান, প্রতিবিঘা জমিতে ধানের উৎপাদন খরচ ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর ধানের বর্তমান বাজারমূল্যে প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে কৃষকের। এমতাবস্থায় সরকারকে কৃষিকাজে যান্ত্রিকীকরণ ও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। তবেই কৃষক উপকৃত হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *