April 16, 2024
আন্তর্জাতিক

দুই মেয়েকে হত্যার পর বাবা-মা বললেন, ‘বাঁচিয়ে তুলতে পারব’

নিজ বাড়িতে মা-বাবার হাতে খুন হয়েছেন আলেখ্যা (২৭) ও দিব্যা (২৩) নামের দুই বোন। গত রোববার ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার মাদানাপাল্লে মণ্ডলে এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্ধবিশ্বাস বা কুপ্রথা রয়েছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেখে, আলেখ্যা ও দিব্যা লাল শাড়ি পরা অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন। তাদের মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। এ সময় ওই দুই তরুণীর মা দাবি করেন, একদিন সময় পেলেই তাদেরকে বাঁচিয়ে তুলতে পারবেন তারা!

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দম্পতির নাম ভি পদ্মজা ও ভি পুরষোত্তম নাইডু। তাদের দুজনের বয়স পঞ্চাশের ঘরে। দুজনেই উচ্চশিক্ষিত ও শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত। পুরষোত্তম মেয়েদের একটি সরকারি কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল ও রসায়নের শিক্ষক। আর পদ্মজার দাবি, তিনি অঙ্কে সোনার মেডেল পেয়েছিলেন। বর্তমানে আইআইটি-র একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়ান।

দুই মেয়েকে খুনের আগে তাদের বাড়িতে পূজা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতি মনে করতেন, তাদের মেয়েদের মধ্যে কোনো অশুভ শক্তি বাসা বেঁধেছে।

হত্যার কিছুক্ষণ আগে তাদেরকে লাল শাড়ি পরে নিজেদের বাড়ি প্রদক্ষিণ করতেও দেখেন প্রতিবেশীরা। অনুষ্ঠানের পর রোববার রাতে পদ্মজা দুই মেয়ের মাথায় ডাম্বেল দিয়ে সজোরে আঘাত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সে সময় সামনে থাকলেও পুরষোত্তম কোনোরকম বাঁধা দেননি বলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে। পুলিশ আসলে তাদেরকে বাড়িতে ঢুকতে বাঁধা দেন ওই দম্পতি।

তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা রবি মনোহরা ছারি বলেন, ‘ঘটনাস্থলের অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, সেখানে পূজা হয়েছিল। লাল শাড়িতে লুটিয়ে পড়েছিল দুই তরুণী। ওই দম্পতি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই বাড়িতে চারজনই থাকতেন। পদ্মজা মেয়েদের হত্যার সময় পুরষোত্তম কোনো বাঁধা দেননি। ওই বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরার খোঁজ পাওয়া গেছে। তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। মনে হচ্ছে, এই খুনের সঙ্গে অন্ধবিশ্বাস জড়িত। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা বলছিলেন, একদিন সময় দিলে তারা মৃত মেয়েদের বাঁচিয়ে তুলবেন।’

পদ্মজা ও পুরষোত্তমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পদ্মজার মানসিক স্থিতি নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আলেখ্যা ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট ম্যানেজমেন্টে কাজ করতেন। চেন্নাইয়ের একটি গানের স্কুলে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করতেন দিব্যা। লকডাউনের সময় থেকেই তারা বাড়িতে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, মেয়েদের খুন করার পর আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ওই দম্পতির।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *