দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম হাওলাদার (৪৬) নামে এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। শনিবার সকালে দেশটির কেপটাউন শহরের ক্রাইফনটেইন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জহিরুলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর শোকের ছায়া নেমে আসে তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে। নিহত ব্যবসায়ী জহিরুল কেপটাউন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। কেপটাউন শহরের ক্রাইফনটেইন এলাকায় তার সুপারশপ ছিল।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, জহিরুল ইসলাম হাওলাদার দীর্ঘ এক যুগ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে আসছেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে তিনি সর্বশেষ বাড়ি থেকে ঘুরে যান। জহিরুলের বাসার পাশের বাসায় মদ খাওয়া, নাচ-গানসহ নানা রকম অসামাজিক কার্যক্রম হয়।
এ নিয়ে জহিরুল তার বাসার মালিককে বলেন। মালিকের কাছে বিচার করায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা ক্ষেপে গিয়ে শনিবার সকালে জহিরুলের বাসায় গিয়ে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হত্যার পর নিহতের লাশ কেপটাউন শহরের হিমাগারে রয়েছে।
নিহত জহিরুল ইসলাম হাওলাদারের স্ত্রী নাছিমা স্বামীর শোকে কাতর। একমাত্র মেয়ে অর্পা ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। বাবার মৃত্যুতে সে নির্বাক। জহিরুলের খুনের সংবাদ পেয়ে শত শত লোক বাসায় এসে ভিড় জমান। সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। মা জয়গুণ নেছা ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে খুব শিগগিরই তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
নিহতের জহিরুল ইসলাম হাওলাদারের মেয়ে শরীয়তপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী অর্পা বলে, আমার বাবাকে তোমরা ফিরিয়ে দাও। আমি কাকে বাবা বলব। কে আমাকে মা বলে ডাকবে। আমার বাবা আর কোনো দিন ফোন করবে না, আমার খবর নেবে না।
নিহত জহিরুল ইসলাম হাওলাদারের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে ওরা কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার স্বামী প্রায় এক যুগ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে। সেখানে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শনিবার সকাল অনুমান ৮টায় তাকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার মতো যেন কেউ আর স্বজন হারা না হয়।