April 26, 2024
আঞ্চলিকফিচারবিনোদন জগৎলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

তেরখাদার পদ্মবিল হাতছানি দিয়ে ডাকছে পর্যটকদের

জয়নাল ফরাজী
‘পদ্মবিল’ খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলায় অবস্থিত। নাম ভূতিয়ার বিল হলেও পদ্ম ফুল ফোটার কারণে পদ্মবিল নাম পেয়েছে পর্যটকদের কাছ থেকে। কর্মব্যস্ত একঘেয়েমী যান্ত্রিক জীবনে জ্বালা জুড়াতে একবার হলেও ঘুরে আসতে পারেন আবহ বাংলার অপরূপ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি পদ্মবিল থেকে। করোনাভাইরাসের দুর্যোগের মধ্যেও ভাসমান পদ্মের রূপশোভা দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে সৌন্দর্য পিপাসুরা ছুটে আসছেন এখানে। চোখ জুড়ানো এ সৌন্দর্য শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদেরই নয়, পরিবেশ সচেতন মানুষদেরও বিমোহিত করছে।
জানা গেছে, খুলনা শহর থেকে জেলখানাঘাট পার হয়ে সেনেরবাজার থেকে তেরখাদাগামী বাসে উঠতে হবে। তেরখাদার দুই-তিন স্টপেজ আগেই হাড়িখালী নামক একটা জায়গায় নামতে হবে। সেখানে থেকে ইজিবাইক নিয়ে চরকুশলা গ্রামে। পিচঢালা পথ। চর কুশলা মোড়ে গিয়ে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে ডিঙ্গি ভাড়া করে নিয়ে পদ্মবিলে যেতে হবে। জেলখানা ঘাট পার হয়ে লেগুনায় করেও সেখানে যাওয়া যায়। পদ্মবিলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য ওখানে অনেক ছোট, মাঝারি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ভাড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। পর্যটক বেশি হলে ১ হাজারও দিতে হতে পারে ভাড়া। মাঝিরাই পুরো পদ্মবিল ঘুরিয়ে দেখায় পর্যটকদের।

পদ্মবিলের অপরূপ স‌ৌন্দর্যে প্রতিবেদক মো. জয়নাল ফরাজী।
পদ্মবিলের অপরূপ স‌ৌন্দর্যে প্রতিবেদক মো. জয়নাল ফরাজী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃত জলরাশির বুকে দল বেঁধে ফুটে আছে চোখ জুড়ানো পদ্ম। যত দূর চোখ যায় সবুজ গাছের সাথে মিশে হাতছানি দিচ্ছে জলরাশির পদ্ম আর পদ্ম। এখানকার মনভোলানো দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। তবে বিলে যাওয়ার উপযুক্ত সময় ভোর না হয় বিকেলকেই বেছে নিতে হবে। হোগলাবন, কচুরিপানার মধ্য দিয়ে ছোট ডিঙি নৌকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরে বেড়াতে আর পছন্দের ছবি তুলতে পারেন। মেতে উঠতে পারেন সেলফি উৎসবে। পদ্মপাতার জলে বিলিয়ে দিতে পারেন নিজেকে। সাথে সামান্য রোদ আর মেঘ-বৃষ্টির খেলা হলে তো কথাই নেই। বিলে ফুটে থাকা অজস্র পদ্ম ছবির মতো সাজানো। বিলটি আকারে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর হলেও ৪০-৫০ হেক্টর সীমানায় ফোটে পদ্মফুল। বাকি অংশে রয়েছে হোগলা, কচুরিপানা ও শেওলা।
খুলনার আযমখান সরকারি কমার্স কলেজের এমবিএ’র শিক্ষার্থী শারমিন শিকদার শান বলেন, বন্ধু, ছোট ভাইবোনদের নিয়ে পদ্মবিলে ঘুরতে এসেছি। নগরজীবনের যান্ত্রিক দশা থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির মাঝে বেড়াতে আসা। বিলের অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখে আমি খুশি। যে কেউ এখানে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
স্থানীয় মাঝিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরে তিনমাস বিলে পানি থাকে, তখন পদ্ম ফোটে। এই সময়টাতে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে। তখন বিলে নৌকায় করে পর্যটকদের ঘুরিয়ে উপার্জন করি। বছরের বাকি সময়ে অন্যান্য কাজের প্রতি ঝুঁকতে হয়। এটাকে যদি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তবে অনেকের কর্মসংস্থান হবে; একই সাথে সাধারণ মানুষ বিনোদনের জায়গাও পাবে।
এ বিষয়ে তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, পদ্মবিলকে ঘিরে প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। দিন দিন এ বিলের সৌন্দর্য প্রিয় মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে। এটিকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন স্পট। এই স্থানের নিরাপত্তা বিধান এবং বিনোদন স্পট হিসেবে এটিকে গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।

‌দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *