তথ্যপাচার মামলায় গ্রেফতার কনস্টেবল ৫ দিনের রিমান্ডে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের মামলায় গ্রেফতার বেনাপোল ইমিগ্রেশনের সাবেক কনস্টেবল দেব প্রসাদ সাহার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্বিতীয় আদালত) আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে দুপুরে আদালতের বিচারক সাইফুদ্দিন হুসাইন পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর (রোববার) বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বাদী হয়ে বেনাপোল থানায় দেব প্রসাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করেন। এরপর ১৭ ডিসেম্বর সকালে দেব প্রসাদ সাহাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে বেনাপোল বন্দর থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার দেব প্রসাদ সাহা বর্তমানে ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কর্মরত। দেব প্রসাদ সাহা খুলনার তেরখাদা উপজেলা সদরের সুরেন্দ্রনাথ সাহার ছেলে। ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তিনি বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বিপি নম্বর ৭৫৯৮০৫১১৯৮ ও কনস্টেবল নম্বর ৭০৩। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় এর জের ধরে তিনি যখন-তখন নো ম্যান্স ল্যান্ড অতিক্রম করে ভারতে যাওয়া-আসা করতেন।
ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারী আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সঙ্গে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দুইজন বেনাপোলে মাঝেমধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুইজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপাচার করতেন।
২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত একটি পেনড্রাইভ নো ম্যান্স ল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করেন। এর পনের দিন পর আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করেন দেব প্রসাদ সাহা।
গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র্যাবের হাতে সৈনিক শাহানেওয়াজ শাহিন আটক হন। এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ একটি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয় এবং ভারতে তথ্যপাচারের বেশ কিছু তথ্য দেন তারা।
পরে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিষয়টি অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আব্দুলাহ আরেফের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্যপাচারের বিষয়টি উঠে আসে।
সেনাসদস্য শাহনেওয়াজ ও অফিস সহকারী আবু হানজালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে ভারতে পাচারের বিষয়টিও দেব প্রসাদ স্বীকার করেছেন বলে মামলার এজাহারে উলেখ করা হয়েছে।