May 5, 2024
জাতীয়লেটেস্ট

ঢাকায় মার্কিন-রাশিয়া দূতাবাসের শীতল লড়াই

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে মস্কোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল আগে থেকেই। তবে নতুন করে সেই টানাপোড়েনের বহিঃপ্রকাশ ঘটল ঢাকায়।

বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে যে শীতল লড়াই চলছে, তা এখন অনেকটাই প্রকাশ্য চলে এসেছে।

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ নিয়ে ঢাকাস্থ রাশিয়া দূতাবাস একটি বিবৃতি দিয়েছে। রাশিয়া দূতাবাসের বিবৃতির জবাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এদিকে ঢাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ নিয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে মস্কো।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাস গত ২০ ডিসেম্বর একটি বিবৃতি দেয়। সেই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে রাশিয়া তার নীতিগত অবস্থানে সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের মতো অনেক রাষ্ট্র বিদেশি শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে নিজস্ব জাতীয় স্বার্থের জন্য তাদের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতি প্রণয়ন এবং একই পন্থা অবলম্বন করে। তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে রাশিয়া।

রাশিয়া দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করে, যারা নিজেদের বিশ্বের শাসক বলে মনে করে, তারা ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ রক্ষার অজুহাতে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। এ ধরনের নীতি স্পষ্টতই বিশ্বব্যবস্থার স্থায়িত্ব নষ্ট করে এবং বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ডেকে আনে। এই তালিকায় আছে যুগোস্লাভিয়া, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া ও আফগানিস্তানসগহ আরও অনেক দেশ।

বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই বলে জানিয়ে ঢাকার রাশিয়ার দূতাবাসের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।

রাশিয়ার দূতাবাসের এই বিবৃতি দেওয়ার একদিন পরেই ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের টুইটার পেজ থেকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত রাশিয়ার বিবৃতিটি শেয়ার করে প্রশ্ন তোলা হয়-  এটা কি ইউক্রেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে মস্কো থেকেও একটি বিবৃতি প্রচার হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা ২২ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে গত ১৪ ডিসেম্বর যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রভাবিত করার জন্য একজন মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার প্রত্যাশিত ফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য বলেও জানিয়েছে মস্কো।

এদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে কূটনীতিকদের শিষ্টাচার মেনে চলার আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। এটি কোনো কলোনি নয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *