ডেঙ্গু জ্বরে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জনের মৃত্যু
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন হাজরা মারা গেছেন, যিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে পরিবারের সদস্যদের ধারণা। তবে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল জানিয়ে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
জ্বরে আক্রান্ত শাহাদৎ (৫৩) রোববার হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঝালকাঠি থেকে বদলি হয়ে গত ৯ জুলাই ডা. শাহাদৎ হোসেন হবিগঞ্জের সিভিল সার্জনের দায়িত্ব নেন। তার পরিবার থাকেন ঢাকায় তেজগাঁও স্টেশন রোডের একটি বাড়িতে। তার ষষ্ঠ য়েণি পড়–য়া মেয়ে আনিকা সুস্মি এবং স্ত্রী শামসুন্নাহারও গত দশ দিনের বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন। তাদের দুজনেরই ডেঙ্গু হয়েছে বলে শাহাদাতের শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা জানান।
সোমবার তিনি বলেন, রক্ত পরীক্ষা করার পর ওদের ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শাহাদৎই ওদের চিকিৎসার খোঁজ খবর রাখছিল। ওদের জ্বর এখন প্রায় সেরে গেছে। এর মধ্যে সে নিজেই মরে গেল।
ডা. শাহাদতের ছেলে ইরফান আবিদ সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। তিনি বলেন, বাবা ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছেন কিনা তা পরীক্ষা করা হয়নি। আসলে পরীক্ষা করার সময়ই পাইনি। তবে ডেঙ্গু জ্বরের সব লক্ষণ ছিল।
হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, রোববার সকালে জ্বর নিয়েই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সমন্বয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন শাহাদৎ হোসেন হাজরা। কিন্তু সভার মধ্যেই শরীর বেশি খারাপ লাগায় ডিসি স্যারকে বলে উনি চলে যান।
সিভিল সার্জন স্যার বলছিলেন, ‘আমার স্ত্রী আর মেয়ের ডেঙ্গু, আমারও মনে হয় ডেঙ্গুই হয়েছে’। কিন্তু এখানে উনি পরীক্ষা করাননি। বলছিলেন ঢাকা গিয়েই করাবেন। দুপুরে একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা উনাকে পাঠিয়ে দিই।
শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন ডা. শাহাদৎ। রাতে তিনি যখন ঢাকায় পৌঁছালেন, তার সঙ্গে হবিগঞ্জ থেকে হাসপাতালের দুজন লোকও এসেছিলেন। জ্বর দেখে গা মুছে দেওয়া হয়েছিল। একটা ছেলেকে দিয়ে ওষুধ আনিয়ে খেলে। কিন্তু রাত ৯টার দিকে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললো। কিন্তু আসাদগেইট পার হওয়ার পরই শেষ হয়ে গেল।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়–য়া সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, তারা জানতে পেরেছেন দুদিন ধরে জ্বর ছিল ডা. শাহাদতের। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হওয়ায় তাকে কোনো পরীক্ষা করা যায়নি।