April 19, 2024
আঞ্চলিক

ডুমুরিয়ার স্কুলছাত্রী মাইশার প্রচেষ্টায় স্মৃতিভ্রম বৃদ্ধ খুঁজে পেলেন পরিবার

 

দ: প্রতিবেদক

খুলনার ডুমুরিয়ার স্কুলছাত্রী মাইশা রহমানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় স্মৃতিভ্রম মানুষ আইয়ুব খুজে পেলেন তার আপনজন। মাইশা রহমানের বাবার নাম হাবিবুর রহমান। তাদের বাসা ডুমুরিয়া সদরে।

২০০৮ সালে মাইশা রহমান তখন খুলনা কলেজিয়েট স্কুলে ক্লাস টুতে পড়ত। বাসে আসা যাওয়ার পথে ডুমুরিয়ার বাস যাত্রী ছাউনিতে মলিন, জরাজীর্ণ এক স্মৃতিভ্রম মানুষকে দেখতো সে। স্মৃতিভ্রম মানুষটি কারো টাকা পয়সা বা খবার গ্রহণ করত না। একদিন সে নিজে টাকা দিলে স্মৃতিভ্রম মানুষটি তা গ্রহণ করে। পরে মেয়ে তার বাবা ও পরিবারের কাছে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাসা হতে নিয়মিত খবার পরিবেশন শুরু হয়।

কিন্তু স্মৃতিভ্রম মানুষটিকে যাত্রী ছাউনির পরিবেশ নষ্ট ও দুর্গন্ধময় করার কারণে তাকে এলাকা ছাড়তে হয়। মাইশা স্কুলে যাওয়ার পথে পাগলকে না দেখে বাবাকে জানায়, স্মৃতিভ্রম মানুষটিকে খুজেঁ তাদের বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাবা হাবিবুর রহমান মেয়ের ইচ্ছায় পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে খোঁজ করে নিজ বাসায় জননী কুঞ্জে নিয়ে যান।

সেই মাইশা রহমান এখন দশম শ্রেনীর ছাত্রী। মাইশা তার বাবা হাবিবুর রহমান, মা হালিমা রহমান আর বোন ডাক্তার পার্সিয়া রহমানের সেবা যতেœ সেই স্মৃতিভ্রম অসুস্থ মানুষটি নিজের কিছুটা স্মৃতি শক্তি ফিরে পেয়েছে। ৫৫/৫৬ বছরের এক বৃদ্ধ স্মৃতিভ্রম অসুস্থ আইয়ুব হোসেনর বাড়ী যশোর জেলা ঝিকরগাছা থানা আঙ্গার পাড়া গ্রামে। পিতার নাম আশরাফ আলী বিশ্বাস, মা ওসিরোন নেছা এখন জীবিত। তবে বৃদ্ধ মা ছেলে হারানোর শোকে শয্যাশায়ী। আইয়ুব হোসেনের স্ত্রী তিন কন্যা আর এক পুত্র। পুত্র বিদেশে শ্রমিকের কাজ করে। শুক্রবার ডুমুরিয়া উপজেলার হাসপাতালের পাশে হাবিবুর রহমানের জননী কুঞ্জে দুই পরিবারের মিলন মেলার পর আইয়ুব হোসেনকে তার  আপনজনেরা নিয়ে গেছে।

মাইশার মা হালিমা রহমান জানান, তারা কোনদিন আইয়ুব হোসেনকে স্মৃতিভ্রম অসুস্থ মানুষ বলতেন না, বলতেন মেহমান। তারা মেহমানকে নিমিয়ত খাবার দিতেন। তবে প্লেটে দিলে খেত না, পলিথিনের ব্যাগে আর পানি বোতলে দিতে হত। তিনি তাদের মেহমান চলে যাবেন এজন্য কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

মাইশা রহমান জানান, ভূপেন হাজারিকার গানের কথা মনে করে তিনি এবং তার পরিবার মানুষের জন্য কিছু করেছেন। আইয়ুব হোসেনকে স্মৃতিভ্রম মানুষ হিসাবে না দেখে তাদের মেহমান হিসাবে দেখেছেন। তিনি ভবিষ্যতে তার বড় বোনের মত ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চান।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *