December 23, 2024
জাতীয়

টেকনাফে রোহিঙ্গা নারীসহ তিনজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

 

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

কক্সবাজারের টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানে এক রাতে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের দুই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে মাদক মামলার দুই আসামি রয়েছেন, যাদের গ্রেপ্তার করার পর সঙ্গে নিয়ে মাদক উদ্ধার অভিযনে বেরিয়েছিল পুলিশ। নিহত অন্যজন একজন রোহিঙ্গা নারী। মাদক পাচারের সময় গোলাগুলির মধ্যে তিনি নিহত হন বলে বিজিবির ভাষ্য।

পুলিশ ও বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, গোলাগুলির ঘটনা দুটি ঘটে শনিবার রাত দেড়টা থেকে রোববার ভোর ৪টার মধ্যে। দুই জায়গা থেকেই মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য দিয়েছেন তারা। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকায় মাদক চোরাকারবারিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত দুজন হলেন- হ্নীলা ইউনিয়নের আলী আকবর পাড়ার মিয়া হোসেনের ছেলে মাহামুদুর রহমান (২৮) এবং হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আফছার (২৫)।

পুলিশ বলছে, তারা দুজনই ওই এলাকার ‘চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারি’ এবং তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক পাচারের অন্তত চারটি করে মামলা রয়েছে টেকনাফ থানায়। এসব মামলায় তারা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।

ওসি প্রদীপ বলেন, মাহামুদুর ও আফছারকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের নিয়ে হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযানে যায়।

ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিদের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে মাদক কারবারিরা পিছু হটে গেলে মাহামুদুর ও আফছারকে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। গুলিবিদ্ধ দুজনকে প্রথমে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শাহীন মো. আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন,  ভোর রাতে টেকনাফ থেকে পুলিশ গুলিবিদ্ধ দুইজনকে নিয়ে আসে। হাসপাতালে পৌঁছানো আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ বলছে, গোলাগুলির পর ঘটনাস্থলে তল­াশি চালিয়ে ১০ হাজার ইয়াবা, ৬টি বন্দুক ও ১৮টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযানে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন এবং তাদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে প্রদীপ কুমার দাশ জানিয়েছেন।

কথিত বন্দুকযুদ্ধের অন্য ঘটনাটি ঘটে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় নাফ নদী সংলগ্ন ওমর খালে। সেখানে নিহত হন রুমানা আক্তার (২০) নামের একজন রোহিঙ্গা নারী। তিনি টেকনাফের অনিবন্ধিত লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বদরুল ইসলামের স্ত্রী।

বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জমাদার বলেন, ভোর রাতে একদল রোহিঙ্গা মিয়ানমারের দিক থেকে নৌকায় করে অনুপ্রবেশের সময় বিজিবির টহল সদস্যরা থামার সংকেত দেয়।

এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। বিজিবির সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দিকে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে এক নারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান মেজর শরীফুল। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা ও দুটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। বিজিবির এক সদস্যও এ অভিযানে আহত হয়েছেন।

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *